• জামাইষষ্ঠী কার্যত বাঙালির ‘হাতপাখা দিবস’ দাবি ৫৯ ধরণের পাখা সংগ্রাহক গ্রন্থাগারিক সুবীরের
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা মালদহ: জামাইষষ্ঠীতে রীতি রয়েছে হাতপাখার জল ছিটিয়ে সন্তানদের মঙ্গল কামনা করার। এয়ার কন্ডিশন, ইলেকট্রিক ফ্যানের যুগে কার্যত বিদায় নিয়েছে হাতপাখা। কিন্তু, জামাইষষ্ঠীর দিন বাঙালি রীতির হাত ধরে ফিরে আসে সেই হাতপাখাতেই। 

    মালদহ শহরের গ্রিনপার্ক এলাকার বাসিন্দা সুবীরকুমার সাহার সংগ্রহে রয়েছে হাতপাখার এক বিস্ময়কর সংগ্রহ। জামাইষষ্ঠীর দিন হাতপাখার ব্যবহার হয় প্রতিটি বাঙালি বাড়িতে। সুবীরবাবু বলেন, জামাইষষ্ঠীকে বাঙালির ‘হাতপাখা দিবস’ বললে অত্যুক্তি হবে না।

    তাঁর কাছে থাকা হাতপাখার সংগ্রহ সম্বন্ধে এই গ্রন্থাগারিক বলেন, তালপাতা, খেজুরপাতা, শালপাতা, কাশগাছ, সুতো, উল, কাপড়, বিভিন্ন ধাতু দিয়ে তৈরি বিভিন্ন আকার ও আয়তনের পাখা রয়েছে তাঁর কাছে। মহারাষ্ট্র, গুজরাট, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড, বিহার, অসম, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার অনেক রকমের পাখা ধীরেধীরে সংগ্রহ করে কার্যত নজির গড়েছেন তিনি। পেশায় আদতে গ্রন্থাগারিক সুবীরকুমার সাহা শুধু যে ৫৯ প্রকারের হাতপাখাই সংগ্রহ করেছেন তাই নয়, রীতিমতো গবেষণাও করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বিদ্যুতের আবিষ্কার হওয়ার আগে গরমে শরীর শীতল করতে হাতপাখাই ছিল মানুষের ভরসা। এই পাখার ইতিহাস প্রায় তিন হাজার বছরের পুরানো বলে দাবি এই গ্রন্থাগারিক গবেষকের। তিনি বলেন, গ্রীক ও রোমান সভ্যতায় হাতপাখার ব্যবহার ছিল। এছাড়াও চীন ও জাপানেরও হাতপাখা ব্যবহারের ইতিহাস রয়েছে। ইউরোপিয়ানরাও এক সময় হাতপাখার ব্যবহার করতেন। ভারতের রাজা মহারাজাদের সিঙ্ঘাসনের পাশে সুদৃশ্য হাতপাখা দোলাতে দেখা যেত রাজ কর্মচারীদের। তিনি বলেন, আজকের যুগে নগর জীবনে হাতপাখা ব্যবহারের চল নেই বললেই চলে। বাতানুকূল যন্ত্র, বৈদ্যুতিক পাখার দৌলতে হাতপাখা বিদায় নিয়েছে নগর জীবন থেকে। তবে এখনও বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলে অনেকেরই ভরসা এই হাতপাখাই।
  • Link to this news (বর্তমান)