১৫ বছর আগে নিরুদ্দেশ মোস্তাফা ফিরলেন গ্রামে, ঈদের আগে খুশির জোয়ার এনায়েতপুরে
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, মানিকচক: ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে নিখোঁজ। পরে গ্রামে ফেরা। এর মাঝে কেটেছে ১৫টা বছর। মানিকচকের এক পরিযায়ী শ্রমিকের ঘরে ফেরার গল্প হার মানাবে সিনেমার কাহিনীকেও।
ভাগ্যের পরিহাসে দেড়দশক পর গ্রামের মাটিতে ফেরা হল মানিকচকের এনায়েতপুরের পরিযায়ী শ্রমিক শেখ মোস্তফা(৪৫)। ঈদের আগে খুশির হাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারে। শনিবার মোস্তাফাকে একঝলক দেখতে তাঁর বাড়ির সামনে কাতারে কাতারে মানুষ। কেউ এনেছেন মিষ্টি, কেউ ফুল।
মানিকচকের এনায়েতপুর পঞ্চায়েতের মীরা গ্রামের বাসিন্দা শেখ মোস্তফা, সামান্য মানসিক ভারসাম্যহীন। পরিবারের আর্থিক সমস্যা মেটাতে বিধবা মা, গর্ভবতী স্ত্রী এবং এক নাবালক সন্তানকে রেখে গ্রামের অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে ২০১০ সালে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে পাড়ি দেন। কয়েক মাস কাজ করার পর ট্রেনে করে বাড়ি ফেরার পথে বেগুসারাই স্টেশনে জল নিতে নামেন তিনি। তারপর থেকে আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সেই সময় মানিকচক থানায় মোস্তাফার নিখোঁজের লিখিত অভিযোগ জানায় তাঁর পরিবার। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি চলে। কিন্তু তাঁর খোঁজ মেলেনি। এভাবে কেটে যায় পনেরোটা বছর। কয়েকদিন আগে সেই গ্রামের শেখ বাচ্চু সহ কয়েকজন টাওয়ারের কাজে গাজিয়াবাদে যান। সেখানে মাঠে কাজ করার সময় জল খেতে গিয়ে তাঁরা মোস্তফাকে জমিতে কাজ করতে দেখে চিনতে পারেন। মোস্তাফাকে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। তাকে সামান্য জিজ্ঞাসাবাদ করে, ছবি ও ভিডিও তুলে পরিবারের কাছে পাঠানো হয়। পরিবারের লোকজন চিনতে পারেন ঘরের লোককে। তারপর মানিকচক থানার পুলিসের সহায়তায় সুদূর গাজিয়াবাদ থেকে মোস্তাফাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনে তাঁদের পরিবার। দীর্ঘ ১৫ বছর পর মোস্তফা বাড়ি ফিরে আসায় তাঁকে দেখতে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে যায় বাড়িতে। গ্রামের লোকজন সহ বেজায় খুশি।
মোস্তফার স্ত্রী সীমা বিবি বলেন, স্বামী নিখোঁজ হওয়ার দীর্ঘদিন পর ধরে নিয়েছিলাম, আমার স্বামী আর বেঁচে নেই। বিধবার জীবন কাটাচ্ছিলাম। বড় ছেলে তখন তিন বছরের। ছোট ছেলে তো বাবার মুখই দেখেননি। স্বামী ফিরে পাওয়াকে ঈদের আগাম উপহার হিসেবে দিয়েছে উপরওয়ালা। আমরা সবাই খুব খুশি। নিজস্ব চিত্র