• স্থানীয়দের নিয়োগ করুন, ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের কাছে আর্জি জোড়াফুলের
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকে দুর্গাপুরের স্থানীয় যুবক-যুবতীদের নিয়োগের দাবিতে সরব হলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও সমবায়মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। শনিবার দুর্গাপুরে সৃজনী হলে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যবসায়ীদের সমস্যার সমাধান ও নতুন বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় যুব সম্প্রদায়ের আক্ষেপ রয়েছে তাঁরা এখানে কাজ পান না। আমরা চাই প্রশাসনিক পোর্টাল থেকে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ দিন আপনারা। একই দাবিতে সরব হন রাজ্যসভার এমপি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি এদিন স্পষ্ট করে দেন ট্রেড ইউনিয়ন নিয়োগে হস্তক্ষেপ করবে না। সরকারি পোর্টাল থেকে আপনারা স্বচ্ছতার সঙ্গে যোগ্যদের নিয়োগ করুন। এদিন সভা মঞ্চ থেকেই আসে সুখবর। ব্যবসায়ী সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, দুর্গাপুরে একটি গ্রিন স্টিল কারখানা গড়তে এডিডিএ যেভাবে সাহায্য করেছে তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা সভা থেকে ঘোষণা করছি, এক বছরের মধ্যে কারখানা তৈরির কাজ শেষ হবে। পাঁচ হাজার স্থানীয় বাসিন্দা কাজ পাবেন। দুর্গাপুরে সৃজনী হলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এডিডিএ চেয়ারম্যান কবি দত্ত, পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, পুলিস কমিশনার সুনীলকুমার চৌধুরী ও জেলাশাসক পোন্নমবলম এস। ব্যবসায়ীদের সামনে আরও একবার শ্রমিক ইউনিয়নের অবস্থান স্পষ্ট করেন ঋতব্রতবাবু। তিনি বলেন, কারখানার গেট পাস শ্রমিক নেতাদের পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আর্জি জানাচ্ছি প্রতিটি শিল্প প্রতিষ্ঠান নিজেদের কারখানায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু করুক। যাতে গেট পাস আটকে শ্রমিক বঞ্চনা বন্ধ হয়। তিনি আরও বলেন, তমলুক সাংগঠনিক জেলায় তিন বছরে তিনজন আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি বদল হয়েছে। আমরা কোনওভাবেই শিল্পে অরাজকতা বরদাস্ত করব না। ঋতব্রতবাবু আরও বলেন, ধর্মঘট করলে মুখ্যমন্ত্রী কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেন, তাই নতুন একটি পদ্ধতি গো স্লো শুরু হয়েছে। অর্থাৎ, কারখানায় উৎপাদনের গতি মন্থর করে দেওয়া। সেটাও বরদাস্ত করা হবে না। তিনি এদিন সভাতেই বলেন, দুর্গাপুর থেকে অভিযোগ পেয়েছি এক শ্রমিক নেতা নিয়োগে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছে। দল তদন্ত করে সত্যতা প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে তাঁর নামে থানায় অভিযোগ করা হবে। এদিনের অনুষ্ঠানে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথবাবু ব্যবসায়ীদের কাছে আর্জি জানান, দুর্গাপুরে বহু নতুন শিল্প গড়ে উঠছে। শহরের পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে হবে। দূষণ এড়ানো আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। এডিডিএ চেয়ারম্যান কবি দত্ত বলেন, সাত দিনের মধ্যে এনওসি না পেলে অষ্টম দিন সরাসরি আমার কাছে আসুন কোনও রকম হয়রানি বরদাস্ত করব না।  

    এদিন ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনিক কর্তাদের সামনে একটি সমস্যা তুলে ধরা হয়।  তাঁরা জানান, ডিভিসির বিদ্যুতের দাম অত্যন্ত বেশি হওয়ায় ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ঝাড়খণ্ডে যেখানে ইউনিট পিছু বিদ্যুৎ খরচ চার টাকা ৫০ পয়সা, সেখানে দুর্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে সাত টাকা ১০ পয়সা। এভাবে চললে কারখানা চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। দুর্গাপুর পুরসভার প্রশাসনিক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় আর্জি জানান, বাম আমলের জঙ্গি আন্দোলনের জেরে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফের কারখানা গড়ে উঠুক। যুবক-যুবতীরা শহরে বাস করুক এই প্রার্থনা করি। 
  • Link to this news (বর্তমান)