বহরমপুরে জাল লটারির কারবারে ধৃত ১, উদ্ধার প্রচুর নকল টিকিট
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কেটে ভাগ্য পরীক্ষা করেও বারবার বিফল হতে হচ্ছে। লাগাতার টিকিট কেটেও মিলছে না পুরস্কার। প্রচুর টাকা খসিয়ে হতাশ অনেকেই। কিন্তু, নকল লটারিতে কীভাবে মিলবে পুরস্কার? এবার বহরমপুরে সেই জাল লটারির টিকিটের কারবারের পর্দাফাঁস করল পুলিস। শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে শহর থেকেই অমরনাথ ঘোষ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ি জিয়াগঞ্জ থানা এলাকায়। বহরমপুর শহরের একটি দোকানে হানা দিয়ে নির্দিষ্ট লটারি কোম্পানির ৪৩০০টি নকল টিকিট উদ্ধার করেছে পুলিস।
মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, নকল লটারি বিক্রির অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আমরা ধৃতকে আদালতে তুলেছি। তাকে জেরা করা হচ্ছে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি নামী কোম্পানির লটারির টিকিটের কালার প্রিন্ট আউট নিয়ে নকল নম্বর বসিয়ে সেগুলি বিক্রি করা হতো। স্বভাবতই এই ভুয়ো লটারির টিকিট কেটে সাধারণ মানুষ কোনও পুরস্কার পেত না। সংশ্লিষ্ট লটারি কোম্পানির কর্ণধারদের কাছে এই খবর পৌঁছয়। বহরমপুরে এসে তারা পুলিসকে জানায়। জাল লটারি চক্রের খবর পেয়ে পুলিস শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালায়। ওই কোম্পানির তরফে এক ব্যক্তি পুলিসের সঙ্গে ছিলেন। অবশেষে একটি গোপন ডেরা থেকে অমরনাথকে গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতের হেফাজত থেকে ৪৩বান্ডিল লটারি উদ্ধার হয়েছে। প্রতিটি বান্ডিলে ১০০টি করে টিকিট রয়েছে। ওই কোম্পানির তরফে পরীক্ষা করে জানানো হয়, প্রতিটি টিকিটের বান্ডিলই নকল। এরপরেই পুলিস তাকে গ্রেপ্তার করে। এক পুলিস আধিকারিক বলেন, দিনের পর দিন এই নকল লটারি ছাপিয়ে মানুষকে প্রতারিত করেছে অভিযুক্ত। সে কোথা থেকে টিকিট ছাপাত এবং কাদের মাধ্যমে সেগুলি বিক্রি করত, সেব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই চক্রের সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তাও আমরা খতিয়ে দেখছি। বহরমপুরের এক বাসিন্দা বলেন, মাঝেমধ্যেই লটারির টিকিট কাটি। কিন্তু আজ পর্যন্ত কখনই পুরস্কার পাইনি। নামী সংস্থার লটারির টিকিটও এভাবে জাল করা হচ্ছে, ভেবেই খুব অবাক লাগছে। আর কখনই লটারি কাটব না।
অন্য এক ক্রেতা বলেন, প্রায়ই কান্দি বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে লটারি কিনি। দু’-একদিন খুব সামান্য টাকা পুরস্কার পেয়েছি। নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করতে ভালোই লাগে। কিন্তু, এখন শুনছি, ভুয়ো লটারি ছাপিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তাতে মনে হচ্ছে, আমরা প্রতারিত হচ্ছি। লটারি কেনার সময় খুব বুঝে-শুনে কিনতে হবে। টিকিটই যদি নকল হয়, তাহলে সেই নম্বর কী করে পুরস্কারে উঠবে? অভিযুক্তের কড়া শাস্তি চাই।