• মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জঞ্জাল কর আদায়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার পুরসভার
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: আয় বাড়াতে খেয়ালখুশি মতো শহরবাসীর উপর বাড়তি করের বোঝা চাপানো যাবে না। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ থেকে রাজ্যের পুরসভাগুলিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী একথা স্পষ্ট করেছিলেন। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কড়া বার্তার পরই সিউড়ি পুরসভা কর্তৃপক্ষ আমজনতার উপর বাড়তি করের বোঝা চাপানোর সিদ্ধান্ত বাতিলের পথে হাঁটতে শুরু করেছে। পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে, জঞ্জাল সাফাই বাবদ শহরের প্রতিটি বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় শহরবাসী কিছুটা হলেও চিন্তিত ছিলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পুরসভার সিদ্ধান্ত বদলে শহরবাসী খুশি। তবে শহরবাসীর দাবি, পুরসভা শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবে এটাই কাম্য। কিন্তু কর না নেওয়ার দোহাই দিয়ে শহরকে জঞ্জালের স্তূপে পরিণত করলে তা মেনে নেওয়া যাবে না। এবিষয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, জঞ্জাল সাফাই বাবদ সার্ভিস চার্জ অর্থাৎ কর আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমেই সেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর আমরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি। তবে শহরের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে কোনও খামতি থাকবে না। 

    পুরসভার অধীনে ২১টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাফাই কর্মীরা আবর্জনা সংগ্রহ করেন। একইভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে নিয়মিত জঞ্জাল সংগ্রহ করা হয়। জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজের মাধ্যমে পুরসভা কর্তৃপক্ষ আয়ের পথ সুগম করার চিন্তাভাবনা করেছিল। সেই মোতাবেক একাধিক বৈঠকে আলোচনাও হয়েছিল। সর্বসম্মতিক্রমে জঞ্জাল সাফাই বাবদ সার্ভিস চার্জ আদায়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল। পুরসভার তরফে স্পষ্ট করা হয়েছিল আগামীতে প্রতিটি বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে সেই সার্ভিস চার্জ অর্থাৎ কর আদায় করা হবে। এক্ষেত্রে সমস্ত পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছিল। বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তিনটি করে ধাপ চূড়ান্ত হয়েছিল। পুরসভার তরফে জানা গিয়েছে, আয়ের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা বাড়ি থেকে মাসে ১০ টাকা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হবে। একতলা বাড়ি থেকে ২০ টাকা ও দোতলা কিংবা তারও বেশি হলে মাসে ৩০ টাকা করে সার্ভিস চার্জ ধার্য করা হবে। 

    অন্যদিকে, ফুটপাতে থাকা খাবার কিংবা চায়ের স্টল থেকে মাসে ৩০ টাকা সার্ভিস চার্জ আদায় করা হবে। স্টেশনারি, মুদি, ওষুধ সহ জামাকাপড়ের দোকানের ক্ষেত্রে তা ৯০ টাকা হবে। শপিংমল, হোটেল ও রেস্তেরাঁর ক্ষেত্রে ২০০ টাকা সার্ভিস চার্জ ধার্য করা হবে। নতুন করে করের বোঝা চাপতে চলেছে শুনে একসময় শহরবাসী কিছুটা হলেও চিন্তিত হয়ে উঠেছিলেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর তাঁরা যথেষ্টই স্বস্তিতে। 

    শহরের বাসিন্দা পঙ্কজ সিনহা বলেন, আমাদের আয় তো সীমিত। তার উপর দ্রবমূল্য বৃদ্ধি পিছু ছাড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি করের বোঝা চাপলে কিছুটা সমস্যা অবশ্য হতো। তবে আমরা চাই শহর যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকে। অরুণ নাগ বলেন, নতুন করে কর চাপানো হলে বাড়তি বোঝা হতো। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে শহরবাসী হিসেবে যথেষ্টই খুশি। 
  • Link to this news (বর্তমান)