• নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ফের মামলা শুরু, আইনি সহায়তার আশ্বাস তৃণমূলের
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: রাজ্য প্রত্যাহার করা সত্ত্বেও নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের ২০০৭-’০৯সালের মধ্যে ১০টি গুরুতর ফৌজদারি মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে পুনরায় চালু হয়েছে। হলদিয়া এসিজেএম আদালতে ছ’টি এবং কাঁথি এসিজেএম কোর্টে আরও চারটি মামলা আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। ওই ১০টি মামলায় প্রায় ৮০জন জমি ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ছিল। আবারও তাঁদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছে। যাঁরা জামিনে ছিলেন, তাঁদের মামলার পরবর্তী দিনে উপস্থিত হতে নোটিস যাচ্ছে। জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা সহ মোট ১৪০জনের বিরুদ্ধে আবারও মামলা শুরু হয়েছে। তাঁরা অধিকাংশই তৃণমূল নেতা-কর্মী। তাঁদের আইনি সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে শনিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল পার্টি অফিসে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়। সেখানে জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক, দলের জেলা সভাপতি সুজিত রায় সহ নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

    ২০০৭-’০৯সালের মধ্যে জমি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১০টি মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল রাজ্য। ২০১৪সালে রাজ্য সরকার খুন, জখম সহ গুরুতর অপরাধ সংক্রান্ত ১০টি মামলা প্রত্যাহার সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। জমি বাঁচাতে চাষিরা আত্মরক্ষার কারণে হিংসার ঘটনা ঘটেছিল বলে রাজ্যের বক্তব্য ছিল। ২০২০সালে নিম্ন আদালত থেকে সেইসব মামলা প্রত্যাহার হয়ে যায়।

    মূলত সিপিএম নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা, খুন ও জখমের ঘটনায় নন্দীগ্রাম ও খেজুরি থানায় জমি আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর ছিল। মামলা প্রত্যাহারকে চ্যালেঞ্জ করে সিপিএমের লিগ্যাল সেল এবং বিজেপি নেতা নীলাঞ্জন অধিকারী হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। গত ১২ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ১০টি গুরুত্বপূর্ণ মামলা পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেয়। অর্থাৎ, নিম্ন আদালতে ওইসব মামলা যে অবস্থায় ছিল সেখান থেকেই পুনরায় শুরু হবে। যেসব মামলায় ওয়ারেন্ট ইস্যু হয়েছিল সেইসব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট থাকবে। যারা জামিনে ছিল তাদের পরবর্তী দিনে আদালতে হাজির হতে হবে।

    ওই ১০টি মামলার মধ্যে একাধিক খুনের ঘটনা রয়েছে। মামলা ফের চালু হওয়ায় নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনকারীরা চিন্তায় পড়েছেন। বিষয়টি দলের নেতৃত্বের নজরে আনা হয়। এই অবস্থায় শনিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল কার্যালয়ে জরুরি মিটিং হয়। এদিন বৈঠক শেষে জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজিতবাবু বলেন, ৭০-৮০জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে রয়েছে। ১০০জনের বেশি মামলায় জর্জরিত। এই লড়াইয়ে দল তাঁদের পাশে থাকবে। মামলায় চার্জশিট থেকে নাম বাদ পড়েছিল। রাজ্য সরকার মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। কিন্তু, বিজেপি নেতার দায়ের করা মামলায় পুনরায় মামলা চালু হয়েছে। বিজেপি নেতা নীলাঞ্জনবাবু বলেন, আমি নন্দীগ্রামের বেশকিছু মামলা রি-ওপেন করার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আদালত রাজ্যের আর্জি খারিজ করে ১০টি মামলা পুনরায় চালু করার নির্দেশ দিয়েছে। সেইমতো হলদিয়া ও কাঁথি এসিজেএম কোর্টে পুনরায় ওইসব মামলা চালু হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)