মৃত সন্তান প্রসবের জের, রাতেই এল আল্ট্রাসোনোগ্রাফির মেশিন
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা বেলদা: হাসপাতালের বাইরে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে গিয়ে রেলগেটে আটকে টোটোর মধ্যে মৃত সন্তান জন্মের ঘটনায় বেলদা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের শোকজ করতে চলেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। শনিবার একথা জানালেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী। পরিস্থিতির পরই শনিবার রাতে হাসপাতালে পৌঁছে যায় আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন। দ্রুত এটি বসানো হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর। শুক্রবার সকালে নারায়ণগড় ব্লকের কসবা এলাকা থেকে আসন্ন প্রসবা এক নাবালিকাকে বেলদা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার। পরিবারের দাবি, হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাচ্চার কোনও সাড়া না পাওয়ায় বাইরে থেকে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে সিজারিয়ান ব্যবস্থা চালু থাকলেও নেই কোনও আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন। ফলে বাইরে থেকে রোগীদের এই পরিস্থিতিতে তা করাতে হয়। শুক্রবার তাই বাইরে একটি বেসরকারি ল্যাবে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করতে গিয়ে কেশিয়াড়ি মোড় লেভেল ক্রসিংয়ে আটকে পড়েন ওই নাবালিকা প্রসূতি। তাঁর সঙ্গে থাকা আশা কর্মীর দাবি, একাধিক ট্রেন ওই সময় পার হওয়ায় প্রচণ্ড ভিড়ে আটকে পড়েন তাঁরা। আর তখনই গর্ভযন্ত্রণা ওঠায় ওই প্রসূতিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে টোটোর মধ্যেই সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হন তিনি। ওই রেলগেটে উড়ালপুল নির্মাণের পাশাপাশি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে কেন আল্ট্রাসোনোগ্রাফির মতো মেশিন নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ঘটনার কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেয় স্বাস্থ্যদপ্তর। শালবনী সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে থাকা অতিরিক্ত একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন বেলদাতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। এদিন রাতেই তা হাসপাতালে পৌঁছে যায়।
পাশাপাশি স্বাস্থ্যদপ্তরের একটি তদন্তকারী দল শুক্রবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে এসে বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করেন। ওইদিন হাসপাতালে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, এই ঘটনা একেবারে অনভিপ্রেত। স্বাস্থ্যদপ্তরের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতালে গিয়ে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে তার রিপোর্ট জমা করেছে। আর সেই মোতাবেক আগামী সোমবার ওইদিন হাসপাতালে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের শোকজের নোটিস পাঠানো হচ্ছে। আশা করছি এর পরে আর এই ধরনের অনভিপ্রেত সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।