দীঘায় রথযাত্রার প্রস্তুতি ঘিরে প্রশাসনিক বৈঠক, ভক্তদের ভিড় সামাল দিতে ব্যবস্থা
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
সংবাদদাতা, কাঁথি: জগন্নাথ মন্দিরের হাত ধরে সৈকতশহর দীঘার রাজপথে সরকারি উদ্যোগে এই প্রথম গড়াবে রথের চাকা। আগামী ২৭ জুন রথযাত্রা উপলক্ষ্যে ব্যাপক দর্শনার্থীর ভিড় হবে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। শুধু তাই নয়, রথযাত্রার দিন থেকে উল্টোরথ পর্যন্ত পুরনো জগন্নাথ মন্দির অর্থাৎ মাসির বাড়ির কাছে রথের মেলাও বসতে পারে। তাই আগে থেকে তার প্রস্তুতি নিতে মাঠে নেমে পড়ল জেলা প্রশাসন। শনিবার জগন্নাথ মন্দিরের মিটিং হলে রথযাত্রা নিয়ে প্রস্তুতি বৈঠক হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি, পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য, জগন্নাথ মন্দির ট্রাস্টের সদস্যরা সহ জেলা প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। রথযাত্রার দিন যাবতীয় আয়োজন ও নিরাপত্তা নিয়ে বৈঠক হয়। কোন দপ্তরকে কী কাজ করতে হবে, তা বলে দেন জেলাশাসক। রথযাত্রা যখন হবে, তখন ভরা আষাঢ়। তাই বৃষ্টির সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে নিকাশি ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন জেলাশাসক সহ অন্যান্য প্রশাসনিক কর্তারা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত নিকাশির কাজ শেষ করতে বলেন জেলাশাসক। পরে তাঁরা যান পুরনো জগন্নাথ মন্দিরে।
আগামী ১০ জুন রথযাত্রার প্রস্তুতি নিয়ে ট্রাস্ট কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে রথের মেলার প্রস্তুতি পর্ব, কোনদিক দিয়ে রথ বের হবে, এরকম নানা বিষয় চূড়ান্ত হবে। জগন্নাথ মন্দিরে রয়েছে মোট আটটি গেট। যেদিকে রথ রয়েছে, সেখানে ৬, ৭ ও ৮ নম্বর গেট রয়েছে। যে কোনও একটা গেট দিয়ে রথ বের হবে। অতিরিক্ত ভিড় ও গাড়ির চাপ সামাল দিতে উদ্বোধনের মতো রথযাত্রার দিনও বাইপাস দিয়ে যানবাহন ঘুরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে পুলিস-প্রশাসন।
উল্লেখ্য, একমাস হল সর্বসাধারণের জন্য খুলে গিয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের দ্বার। এরপর থেকেই মন্দির এবং প্রভুর দর্শনে বহুদূর থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমাচ্ছেন। ইতিমধ্যে একমাসে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ দর্শন করেছেন জগন্নাথ মন্দির, এমনটাই দাবি মন্দির ট্রাস্টের কর্তাদের। ২৭ জুন শুক্রবার। তারপর শনি ও রবিবার। স্বাভাবিকভাবেই ওই সময়টা অতিরিক্ত ভিড় হবে বলে ধারণা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও হোটেল মালিক সংগঠনের কর্তাদের। আগামী ১২ জুন দীঘায় অনুষ্ঠিত হবে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। সেদিন থাকবে বিশেষ আয়োজন। এরপর রথের দিন সকাল ১১টায় ‘পাহান্ডী বিজয়’ অনুষ্ঠান হবে। দুপুর ১টায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সোনার ঝাড়ু দিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন। রথ যাবে মাসির বাড়ি পর্যন্ত।
মন্দির ট্রাস্টের সদস্য তথা ইসকনের কলকাতা শাখার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন, গৌড়ীয় রীতি মেনে রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। রথের দিন সকালেই ৫৬ ভোগ দেওয়া হবে। এরপর রথে প্রভু উঠে গেলে শুকনো ভোগ দেওয়া হবে। রথযাত্রার অনুষ্ঠানে ইউক্রেন, আমেরিকা, রাশিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে বহু বিদেশি ভক্ত আসবেন।