বাড়িতেই অবৈধ বাজি কারখানা, পুলিসি অভিযানে গ্রেপ্তার ৫ জন
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বাড়িতেই কুটির শিল্প হিসেবে বাজির কারখানা বানিয়েছিল রেজিনগরের ফরিদপুর কাহারপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা। শুক্রবার সন্ধ্যায় রেজিনগরের সেই অবৈধ বাজি কারখানায় অভিযান চালায় পুলিস। বিশাল পুলিস বাহিনী কার্যত গোটা গ্রাম ঘিরে ফেলে। তারপর শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। এক মহিলা সহ পাঁচজনকে পুলিস গ্রেপ্তার করে। পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল রাজু শেখ, হাবিবুর শেখ, হাসিনা বেওয়া, সোয়েব শেখ, সৌমেন কর্মকার। ‘কারখানা’ থেকে ১৮২ কিলোগ্রাম বাজি তৈরির মশলা ও সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। ধৃতদের কারও নামে কোনও বাজি তৈরির লাইসেন্স নেই বলেই জানিয়েছেন পুলিস আধিকারিকরা।
মুর্শিদাবাদের পুলিস সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, অবৈধভাবে বাড়িতেই বাজি তৈরি করা হচ্ছিল। আমরা অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছি। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ি এবং পার্শ্ববর্তী দু’টি গুদামঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে ১৭কিলোগ্রাম বারুদ, ২৭কিলোগ্রাম হলুদ সালফার পাউডার, ১১৬কিলোগ্রাম তৈরি আতশবাজি, ২১কিলোগ্রাম বাঁশ, কাগজ এবং অন্যান্য কাঁচামাল। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক পদার্থ পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠিয়েছে পুলিস। এই অবৈধ বাজি কারখানায় কোথা থেকে বারুদ এবং অন্যান্য মশলার জোগান দেওয়া হতো, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। কাহারপাড়ার ওই বাড়ির পিছনের পুকুরের পার্শ্ববর্তী একটি ফাঁকা জায়গায় অবৈধভাবে বাজির কারখানা তৈরি করা হয়েছিল। সেখানে দু’টি গুদামে কাঁচামাল ও তৈরি করা বাজি মজুত করে রাখা হতো। এই সমস্ত অবৈধ বাজি পৌঁছে যেত জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। সরকারি নিয়ম এবং নির্দেশিকাকে তোয়াক্কা না করেই দিনের পর দিন বাজির ব্যবসা চালাচ্ছিল অভিযুক্তরা। এই অবৈধ কারবারে আরও বেশ কয়েকজন যুক্ত আছে বলে মনে করছে পুলিস। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
কাহারপাড়ার বাসিন্দাদের দাবি, কখনও মনে হয়নি যে অবৈধভাবে এই ব্যবসা চলছে। বাড়িতে অনেকেই যেমন কামারশালা কিংবা তাঁতের কাজ করে, সেরকম এরা বাজি তৈরি করছিল। আমরা ভেবেছিলাম সরকারি লাইসেন্স বা অনুমতি হয়তো আছে। কখনও তাদের এব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করিনি।
বাড়ির পাশে এই ধরনের দাহ্য পদার্থর কারখানা রয়েছে, সেটা নিয়ে একটা ভয় হতো। পুলিস সবাইকে ধরে নিয়ে গিয়েছে। আশা করি, এবার বাজি কারখানা বন্ধ হবে। -নিজস্ব চিত্র