বাড়িতে ঢুকে মহিলাকে মারধরের অভিযোগ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: জমি নিয়ে বিবাদের জেরে বাড়িতে ঢুকে চুলের মুঠি ধরে মহিলাকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে শান্তিপুরের এক দাপুটে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। যিনি নদীয়া দক্ষিণ জেলা বিজেপির সহ সভাপতি। শান্তিপুর থানার বাবলা পঞ্চায়েত এলাকার ওই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে। ওই মহিলা বিজেপি নেতা নির্মল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। যদিও নির্মলবাবু অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাবলা পঞ্চায়েতের বাথনা গ্রামে স্টেশন এলাকার বাসিন্দা সরস্বতী মিত্রের সঙ্গে নির্মলবাবুদের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিবাদ চলছে। ওই জমি বিবাদ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সেই বিবাদের জেরে শনিবার ওই মহিলার বাড়িতে চড়াও হন নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি নির্মলবাবু। অভিযোগ, প্রথমে মহিলাকে তিনি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে তাঁকে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। আক্রান্ত মহিলার চিৎকার প্রতিবেশীরা জড়ো হন। সেই সময় সরস্বতীদেবীর কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে ওই বিজেপি নেতা পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
আক্রান্ত সরস্বতীদেবী বলেন, আমি দু’টি আম কুড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। সেই সময় আচমকা নির্মলবাবু এসে প্রথমে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমি প্রতিবাদ করলে চুলের মুঠি ধরে মাটিতে ফেলে মারধর করে। টেনে হিঁচড়ে বেশকিছুটা নিয়ে যায়। ততক্ষণে আশেপাশের লোকজন চলে এলে আমার ব্যাগ থেকে টাকা ছিনিয়ে পালিয়ে যায়। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, মারধরের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা তৃণমূলের চক্রান্ত। আমি কাউকে মারধর করিনি। জমি নিয়ে একটি সমস্যা রয়েছে। তা নিয়ে আমি মামলা করছি। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, দল কোনওভাবেই মহিলাদের উপর নির্যাতনকে প্রশ্রয় দেয় না। আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি একজন মহিলা। আমাদের জেলা সভাপতিও মহিলা। পুলিসি তদন্তে দোষী প্রমাণ হলে দল ব্যবস্থা নেবে। যে-ই হোক, মহিলাদের উপর অত্যাচারকে প্রশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, এটাইতো বিজেপির সংস্কৃতি। প্রকাশ্যে গুন্ডামি করছেন একজন নেতা। মানুষ কেন এদের ভোট দেয় না, সেটা নিজেরাই প্রমাণ করে দেয় নিজেদের কর্মকাণ্ড দিয়ে। পুলিস তদন্ত করুক। অভিযোগ সত্যি হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। -নিজস্ব চিত্র