চিকিৎসক পরিচয়ে প্রসূতির গোপনাঙ্গ দেখতে চেয়ে গ্রেপ্তার বিহারের শ্রমিক
বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ভিডিও কলে চেকআপের নামে দেখতে চাওয়া হয়েছিল প্রসূতির গোপনাঙ্গ। এমনই গুরুতর অভিযোগে এক নির্মাণ শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে রানাঘাট থানার পুলিস। ধৃতের নাম শেখ আসলেম। শনিবার ভোররাতে অভিযুক্তকে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯মে রানাঘাট শহরের পূর্বপাড়ের একটি হেল্থ সেন্টারে এএনএম পদে কর্মরত এক স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে উড়ো ফোন আসে। ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে শেখ আসলেম নিজেকে রানাঘাট হাসপাতালের চিকিৎসক দাবি করে ওই স্বাস্থ্যকর্মীকে নির্দেশ দেন, সদ্য সন্তান প্রসব করেছেন এমন প্রসূতিদের তিনি ভিডিও কনফারেন্সিং-এ চেকআপ করতে চান। ‘টেলিমেডিসিন’ পরিষেবা চালু হওয়ায় সন্দেহ হয়নি স্বাস্থ্যকর্মীর। এরপর তিনি এক আশাকর্মীকে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ মতো আশাকর্মী এক প্রসূতিকে চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া আসলেমের নম্বর দিয়ে তাকে ভিডিও কল করতে বলেন।
ভিডিও কলে আসলেম ওই প্রসূতিকে বলে সদ্যোজাতকে ঠিকমতো স্তন্যপান করানো হচ্ছে কি না, তা তিনি দেখতে চান। যদিও সেই সময় সন্তান ঘুমোচ্ছে বলে এড়িয়ে যান ওই মহিলা। এরপর অভিযুক্ত দাবি করে সিজারের সেলাই অংশটি তাকে দেখাতে হবে। সেই দাবি মেনে ওই মহিলা পেটের কাছে সেলাইয়ের অংশটি দেখান। অভিযোগকারী মহিলার দাবি, এরপরই চিকিৎসক পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তি সরাসরি গোপনাঙ্গ দেখতে চান। বিষয়টি সন্দেহজনক লাগায় তিনি ফোন কেটে দেন। এরপর তিনি রানাঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে হাসপাতালের কোনও চিকিৎসক এই ধরনের ফোন করেননি। তখনই সন্দেহ হয় পুলিসের। তদন্তে নেমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ওই স্বাস্থ্যকর্মীদের। এরপর ওই মোবাইল নম্বরের টাওয়ার লোকেশন ট্রাক করে পুলিস জানতে পারে, অভিযুক্ত রয়েছে পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে। শুক্রবার গভীর রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আসলেমকে। ধৃতের বাড়ি বিহারের পাটনায়। যদিও সে মন্তেশ্বরে নির্মাণকর্মী হিসেবে কাজ করছিল।
তার সহকর্মীরা পুলিসকে জানায়, কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই ওই যুবক বিভিন্ন অচেনা নম্বরে ফোন করত। এমনকী সে যে সিম ব্যবহার করত সেটি নিজের নামেও নয়। আদালতে তোলার সময় অভিযুক্ত অবশ্য সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। এই ভুল আর হবে না। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। আর কারও সঙ্গে ওই যুবক এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র