• আজ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ পুরনো মডেলের ফোনে
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অ্যান্ড্রয়েড থেকে আইফোন—বেশ কিছু পুরনো মডেলের স্মার্টফোনে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা। আজ, রবিবারই কার্যকর হচ্ছে বিষয়টি। প্রথমে মে থেকে এই পরিষেবা বন্ধের কথা জানিয়েছিল ‘মেটা’ বা তার অধীন সংস্থা হোয়াটসঅ্যাপ। যদিও ভারতের জন্য সেই সিদ্ধান্ত কিছুটা পিছিয়ে জুন মাসে কার্যকর করা হল। সংস্থার দাবি, ব্যবহারকারীর সুরক্ষা এবং গোপনীয়তা নিশ্চিত করার জন্যই এই ব্যবস্থা।

    হোয়াটসঅ্যাপ এখন আর উচ্চবিত্ত ও তরুণ সমাজের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। অন্তত বছর পাঁচেক ধরে, বিশেষ করে কোভিডকালের পর বহু সাধারণ নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত এবং প্রবীণ মানুষ এতে সড়গড় হয়ে গিয়েছেন। বয়স, আর্থ-সামাজিক অবস্থা দিয়ে আর হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের আলাদা করা যায় না। এখন এতে আর্থিক লেনদেনের সুবিধা রয়েছে। ফলে, সুরক্ষা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা থাকেই। বহু মানুষ অ্যাপটি ব্যবহার করলেও নিজেদের ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার দিকগুলি নিয়ে অবগত নন। ফলে, সংস্থাকেই নিরন্তর এর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নানা আপডেট, ‘বাগ’ (অপ্রয়োজনীয় ও ক্ষতিকারক ডিজিটাল প্রোগ্রাম) নির্মূলকরণ এবং নানা ফিচার বা বৈশিষ্ট্যে পরিবর্তন আনতে হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, এখন আর হোয়াটসঅ্যাপের প্রোফাইল ছবি অন্য কেউ ডাউনলোড করতে পারেন না। কারণ, এভাবে অনেক প্রতারণা এবং ব্ল্যাকমেলিংয়ের ঘটনা ঘটেছে।

    পুরনো মডেলের স্মার্টফোনে পরিষেবা বন্ধের আরও একটি দিক রয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপের নানা ফিচার এখন গ্রাহক পরিষেবার চেয়েও বেশি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন চ্যানেল, বিজনেস অ্যাকাউন্ট, কমিউনিটিজ প্রভৃতি। এগুলি থেকে সংস্থার বেশ লাভ হয়। সেই পরিষেবাগুলির সুবিধা নেওয়ার জন্যও আধুনিকতম স্মার্টফোন থাকা প্রয়োজন। তাই বলি দিতে হচ্ছে পুরনো অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এবং সর্বোপরি পুরনো ফোনগুলিকে।

    সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতেই সবচেয়ে বেশি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারী রয়েছেন। সংখ্যাটা ৮৫ কোটিরও বেশি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে ব্রাজিল (১৪ কোটি) এবং ইন্দোনেশিয়া (১১ কোটি)। তবে তারা অনেক পিছনে। পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে ভ্রমণের ছবি-ভিডিও প্রিয়জনের সঙ্গে শেয়ার করা, চিকিৎসককে হেলথ রিপোর্ট বা প্রেসক্রিপশন পাঠানো প্রভৃতি কাজে মোটামুটি অভ্যস্থ এ দেশের প্রবীণ সমাজের বড় অংশ। পুরনো মডেলের ফোন তাঁরাই বেশি ব্যবহার করেন। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা যুবক-যুবতী এবং মাঝবয়সিরাও রয়েছেন সেই তালিকায়। সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গিয়ে দেশের এই অংশটিকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে বাড়তি আর্থিক চাপের মধ্যে। নানা সরকারি প্রকল্পের বার্তাও এখন হোয়াটসঅ্যাপে আসে। তাই যে কোনওভাবেই হোক একটি উন্নত, দামি ফোনের ব্যবস্থা তাঁদের করতে হবে। মোটামুটিভাবে হাজার দশেক টাকার ধাক্কা তাতে। হোয়াটসঅ্যাপ অবশ্য বলছে, ফোনটি যদি অপারেটিং সফ্টওয়্যার অ্যান্ড্রয়েডের ৫.১ সংস্করণ আর আইওএসের ১৫.১ সংস্করণে উন্নীত করার সুযোগ দেয়, তাহলে তাতে অ্যাপটি ব্যবহার করা যাবে।
  • Link to this news (বর্তমান)