• পাক চরের খোঁজে ৭ রাজ্যে হানা, কলকাতায় আটক ১
    বর্তমান | ০১ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই’এর ‘চর’ এবং তাদের স্লিপার সেলের খোঁজ অব্যাহত। শনিবার সকালে কলকাতা সহ দেশের সাতটি রাজ্যের ২০টি জায়গায় হানা দিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। গত ২০ মে দিল্লি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আধা সামরিক বাহিনী সিআরপি’র এএসআই রাজস্থানের মোতিরাম জাটকে। তাকে জেরা করে জানা যায়, আইএসআই হ্যান্ডলাররা পাকিস্তান থেকে টাকা পাঠাত, তা দুবাই থেকে হাওলা রুটে কলকাতায় পৌঁছত। সেই টাকা যেত জাটের কাছে। কিন্তু দুবাই থেকে কলকাতায় কার কাছে সেই টাকা আসত, কে তা অনলাইনে জাটের অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিত, তার সন্ধানেই এনআইএ’র এই অভিযান। এই পর্বে দক্ষিণ কলকাতার মোমিনপুরের এক ট্রাভেল এজেন্সি তথা সাইবার কাফেতেও হানা দেন এনআইএ আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে এই কাফে থেকেই অনলাইনে থার্ড পার্টি অ্যাপের মাধ্যমে টাকা পৌঁছেছিল পাক চর ওই সিআরপি এএসআইয়ের কাছে। তার মধ্যে গত বছরের ৩ এপ্রিল একইদিনে তিন দফায় মোট ৫০ হাজার টাকা পৌঁছেছিল মোতিরাম জাটের কাছে। মোমিনপুরের এই কাফে মালিকের ল্যাপটপ এবং মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কাল, সোমবার এনআইএ’র কলকাতা অফিসে আসার জন্য নোটিসও ধরানো হয়েছে কাফে মালিক মাসুদ আলমকে। আলম সাহেব জানিয়েছেন, তদন্তে তিনি সবরকমের সহযোগিতা করবেন। এরই পাশাপাশি তপসিয়া এলাকার একটি হোটেল থেকে আইএসআই এবং তাদের ভারতীয় চরদের এক ‘লিঙ্কম্যান’কে আটক করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তল্লাশি চলেছে পার্ক সার্কাস এলাকাতেও। 

    এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, সিআরপি জওয়ান মোতিরাম জাটের কাছে কলকাতা ও সংলগ্ন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ এলাকার ছবি পৌঁছেছিল। যেগুলো পাকিস্তানে পাঠানো হয়। সেই ছবিগুলি জাটকে যে বা যারা সরবরাহ করেছিল, খোঁজ চলছে তাদেরও। পহেলগাঁও গণহত্যা এবং ভারতের প্রত্যাঘাত পর্ব থেকে পাক চর খুঁজতে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ‘অপারেশন মিরজাফর’। ইতিমধ্যেই খানাতল্লাশিতে আইএসআই সম্পৃক্ততার অভিযোগে ভ্লগার, ব্যবসায়ী, রাজ্য সরকারি কর্মচারী, প্রতিরক্ষা সংস্থার কর্মী, আধা সেনা সহ ২০ জনের বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে। 

    এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা ছাড়াও হরিয়ানা, রাজস্থান, দিল্লি, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ এবং অসমের বিভিন্ন অংশে এদিন হানা দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকে তদন্তকারী সংস্থার ‘স্ক্যানারে’ আনা হয়েছে। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, সিআরপি জওয়ান আদালতের নির্দেশে এখন এনআইএ হেফাজতেই রয়েছে। তাকে জেরা করে জানা গিয়েছে, গত  আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে সে আইএসআইয়ের হয়ে ‘চরবৃত্তি’ করছে। কীভাবে তার কাছে টাকা পৌঁছত, খোলসা হয়েছে সেই বিষয়টিও। এই পর্বে তদন্তকারী সংস্থা মোতিরামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর (৬৪৪*****১০) খতিয়ে দেখে। সেখানে থার্ড পার্টি অ্যাপ ‘পে পয়েন্ট’ অ্যাকাউন্ট  (৯৮৩******৭) থেকে টাকা ঢুকেছে। গত বছরের এপ্রিল মাসের তিন তারিখে পে পয়েন্টের ওই অ্যাকাউন্ট থেকে তিন দফায় যথাক্রমে ২২ হাজার, ১৩ হাজার এবং ১৫ হাজার টাকা ঢুকেছে সিআরপি জওয়ানের অ্যাকাউন্টে। তদন্তকারীরা খোঁজ নিয়ে দেখেন, থার্ড পার্টি অ্যাপটি ব্যবহার করা হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার মোমিনপুরের ৪৫/৩, ডায়মন্ডহারবার রোডে  মাসুদ আলমের  কাফে থেকে।   
  • Link to this news (বর্তমান)