অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পুলিশের কাছে হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত, রবিবার ফের তলব
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ জুন ২০২৫
বোলপুরের আইসি-কে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজের ঘটনায় শনিবার শান্তিনিকেতন থানায় হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি তাঁর আইনজীবীকে থানায় পাঠিয়েছিলেন। এই ঘটনায় প্রথম নোটিসে হাজিরা এড়ালেও দ্বিতীয় নোটিসে ফের তাঁকে তলব করেছে পুলিশ। রবিবার সকাল ১১টায় বোলপুর এসডিপিও অফিসে তাঁকে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টার মধ্যে শান্তিনিকেতন থানায় অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরা দিতে বলেছিল পুলিশ। অনুব্রত মণ্ডল আসবেন, তাই পুলিশি ব্যবস্থাও ছিল আঁটোসাটো। কিন্তু দেখা গেল, অনুব্রত শেষমেশ এদিন হাজির হননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, কেষ্ট অসুস্থ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার অনুব্রত শান্তিনিকেতন থানায় হাজিরা না দিলেও এদিন বোলপুর মহকুমা আধিকারিকের দপ্তরে তাঁর ৪ আইনজীবী দেখা করেন। বোলপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবী বিপদতারণ ভট্টাচার্য এবং সন্দীপ সরকার ছাড়াও আরও দুইজন আইনজীবী যান সেখানে। অনুব্রতের অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে সেখানে আইনজীবীরা তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেন। এরপরই পুলিশের তরফে ফের রবিবার সকাল ১১টায় তাঁকে বোলপুর এসডিপিও অফিসে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে অনুব্রত মণ্ডল এবং বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের মধ্যে ফোনে কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেই ভিডিওতে অনুব্রতকে বোলপুরের আইসি-র বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দিতে শোনা যায়। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। এরপরই পুলিশ সেই অডিও কাণ্ডে অনুব্রতর বিরুদ্ধে চারটি ধারায় অভিযোগ দায়ের করে। তার মধ্যে দুটি জামিন অযোগ্য ধারাও যুক্ত করা হয়েছে। তাঁকে নোটিস পাঠিয়ে শনিবার শান্তিনিকেতন থানায় তলব করা হয়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে হাজিরা এড়িয়েছেন অনুব্রত। সূত্রের খবর, আগামী সোমবার আগাম জামিনের আবেদনে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন অনুব্রত।
এদিকে এই ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে কড়া বার্তা পাঠায়, ৪ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপরই তাঁকে শোকজ করা হতে পারে বুঝতে পেরে আগাম চিঠি লিখে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা। কারণ হিসেবে তিনি একাধিক ঘুমের ওষুধ খাওয়া এবং শারীরিক অসুস্থতার জন্য এই ভুল করে ফেলেছেন বলে দাবি করেন। ক্ষমা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছেও। কিন্তু ক্ষমা চাইলেও শনিবার তিনি হাজিরা এড়িয়েছেন। এখন দেখার রবিবার অনুব্রত হাজিরা দেন কিনা।