• জামাইয়ের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় গিয়ে থালি-উদযাপন
    এই সময় | ০১ জুন ২০২৫
  • এই সময়: মাছ-মাংসের বাজার শনিবার থেকেই 'গরম'। আজ, রবিবার জামাইষষ্ঠীতে 'উত্তাপ' আরও বাড়বে। তাই আগেভাগেই রেস্টুরেন্ট-রেস্তোরাঁয় থালি বুকিং করেছেন অনেকে। বাড়িতে রান্না করতে যে খরচ এবং হ্যাপা, তুলনায় রেস্টুরেন্টে খরচ অনেক কম। এই কারণেই শহরতলির পাশাপাশি জেলা সদরেও এই ট্রেন্ড ক্রমশ বাড়ছে।

    জলপাইগুড়ি শহরে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বিভিন্ন থালির অফার চালু করেছে। জলপাইগুড়ি শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে একটি নামী রেস্তোরাঁয় জামাইষষ্ঠী স্পেশাল থালির মূল্য ২৯৯৯ টাকা। আম পোড়া শরবত থেকে শুরু করে ফ্রুট স্যালাড, লুচি, আলুর দম, ইলিশ মাছ, ডাব, চিংড়ি, পাঁঠার মাংস, সবই রয়েছে। ময়নাগুড়ির বাসিন্দা সংহিতা মণ্ডল বলেন, 'বোনের জামাই আসবে। বাড়িতে রান্নাবান্না করতেই সময় কেটে যায়। গল্প করে সময় কাটাতে রেস্তোরাঁয় খাবার বুক করেছি।'

    জামাইষষ্ঠীতে দিল্লি থেকে জলপাইগুড়ির বাড়িতে এসেছেন সোমা মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'দুই মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ করেছি। অনেক দিন পরে দেখা হবে। রান্নায় ব্যস্ত থাকলে আনন্দ করব কী করে? তাই এখানে খরচের বিষয়টি গৌণ।' রেস্তোরাঁর ম্যানেজার অভিনন্দন ঘোষ জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে প্রচুর বুকিং এসেছে। অধিকাংশই শহরের বাইরে থেকে। শহরের আরও একটি রেস্তোরাঁ জামাইষষ্ঠীর অফার দিয়েছে। চিকেন থালি ৩৯৯ টাকা, মাটন থালি ৪৯৯ টাকা। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের বনেদি বাঙালি রেস্টুরেন্ট দু'ধরনের স্পেশাল থালির ব্যবস্থা করেছে।

    ৫৯৯ টাকার মেনুতে রয়েছে আম পানা, স্যালাড, পোস্ত মুরগি, কচুরি, সাদা ভাত, পোলাও, ছোলার ডাল, পটলের দোরমা, মোচার ঘণ্ট, ভেটকি পাতুরি, খাসির মাংস, আমের চাটনি, পাঁপড়, দই, সন্দেশ ও রসগোল্লা। ১০৯৯ টাকায় থালিতে অতিরিক্ত যোগ করা হয়েছে ফিশ ফ্রাই, মাছের মাথার ঝাল, চিতল মাছের মুইঠা ও দই ইলিশ। রেস্টুরেন্টে মালিক অভিজিৎ পাল বলেন, 'জামাইষষ্ঠীতে স্পেশাল থালির জন্য শুক্রবার ৫০ জন বুকিং করেছেন। সেটা আরও বাড়বে। আমরা যে টাকায় থালি দিচ্ছি, বাড়িতে রান্না করলে খরচ অন্তত চল্লিশ শতাংশ বেশি হবে।'

    আলিপুরদুয়ারে বেশ কিছু হোটেল ও রেস্তোরাঁয় মিলছে ৭৭০ টাকার সস্তার কম্বো প্যাক। সেখানে থাকছে সাদা ভাত, আলু ভাজা, চিংড়ির মালাইকারি, ইলিশের পাতুরি, খাসির মাংস, পোলাও, চাটনি, দই, মিষ্টি ও পায়েস। বাজার থেকে কিনে বাড়িতে রান্না করলে যে খরচ হবে, তার তুলনায় কম খরচে হোটেল বা রেস্তোরাঁয় মিলছে 'জামাইষষ্ঠীর বাহারি থালি'। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বছর সত্তরের এক প্রবীণের কথায়, 'বাজার দরের সঙ্গে পেনশনের টাকায় আর পাল্লা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সাবেকিয়ানা ছেড়ে রেস্তোরাঁয় এ বার জামাইষষ্ঠী পালন করব।'

    উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের চিত্রটাও প্রায় এক। জামাইয়ের ভূরিভোজের জন্য রেস্তোরাঁয় বুকিং বেড়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, পরিবারের সদস্য সংখ্যা কম, রান্না করার সমস্যা এড়াতে রেস্টুরেন্টমুখী হয়েছেন তাঁরা। শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ১৯টি পদ দিয়ে খাওয়ার প্লেটের দাম ধার্য করেছে ১৫০ টাকা।

  • Link to this news (এই সময়)