এই সময়, শিলিগুড়ি: নিম্নচাপের জেরে অতিবৃষ্টির আশঙ্কায় উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলা এবং সিকিমের মঙ্গনে লাল সতর্কতা জারি করল আবহাওয়া দপ্তর। শনিবার রাতে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, কালিম্পং এবং উত্তর সিকিমে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
২৮ মে থেকে উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। অতিবৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যে ব্যাপক ক্ষতির মুখে উত্তর সিকিমের মঙ্গন। ইতিমধ্যেই চুংথাং এলাকায় রাস্তাঘাট বেহাল হয়ে পড়েছে। লাচুংয়ে আটকে পড়েছেন কয়েকশো পর্যটক। মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। তিস্তা নদীতে জলস্ফীতির জেরে ঘোর বিপাকে সিকিমের সিংতামের সিরিয়ানি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।
প্রকল্পের বাঁধের একাংশ ভেঙে পড়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে চুংথাং থেকে মুনশিতাং যাওয়ার রাস্তায় পর্যটক বোঝাই একটি উঁচু পাহাড় থেকে তিস্তার বুকে আছড়ে পড়ে। ওই ঘটনায় এখনও নিখোঁজ আট পর্যটক। তাঁদের খোঁজ মেলেনি। সন্ধান মেলেনি কোনও মৃতদেহের। এই পরিস্থিতিতে সিকিম রাজ্য প্রশাসন পর্যটকদের উত্তর সিকিম এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
শনিবার উত্তর সিকিমের জন্য কোনও পারমিট ইস্যু করা হয়নি। রবিবার পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রংপো, তিস্তাবাজার ও সিংতামে তিস্তার জলস্ফীতি প্রায় আড়াই মিটার বেড়েছে। সিকিম রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে সরে আসার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
কালিম্পংয়ের তিস্তাবাজার এলাকাতেও কয়েকশো পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যে সরকার ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গে ব্লকস্তর পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। ডুয়ার্সের ক্রান্তি, ময়নাগুড়ি এলাকাতেও তিস্তার তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি বিপর্যয় মোকাবিলা দলকেও সতর্ক করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের গ্যাংটক শাখার আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, 'অতিবৃষ্টির জেরে তিস্তার জলস্ফীতি ঘটেছে। আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি গুরুতর আকার নিতে পারে। সেই কারণে প্রশাসনের সমস্ত স্তরকে সতর্ক করা হয়েছে।’ হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে উত্তর সিকিম কার্যত বিধ্বস্ত। লাচুংয়ে কয়েকশো পর্যটক আটকে পড়েছেন। তাঁদের লাচুংয়েই আপাতত রাত্রিবাস করতে বলা হয়েছে। রবিবার পরিস্থিতি বুঝে তাঁদের ওখান থেকে আনার ব্যবস্থা করা হবে।’