বৃহস্পতিবারের পর রবিবার। ফের বিনা অনুমতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি সামনে চলে গেলেন চাকরিহারারা। রবিবার তিন জনের প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হাজির হন। মিলন সংঘের ক্লাব পর্যন্ত যেতে পারেন তাঁরা। কিন্তু অনুমতি না থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি। তবে অফিসাদের সঙ্গে কথা বলে ফিরে এসেছেন চাকরিহারারা। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পুলিশি অনুমতি ছাড়াই কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে হাজির হন চাকরিহারা ৬ মহিলা প্রতিনিধি। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে কালীঘাট থানায় নিয়ে যায়। কয়েক ঘণ্টা পর থানা থেকে বেরোন তাঁরা।
রবিবার সঙ্গীতা সাহা, মিতা সরকার, নির্মল বারকান্দজ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে কালীঘাটে পৌঁছন। তাঁরা মিলন সংঘ ক্লাবের ভিতরেও যান। সেখানে পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। অফিসাররা নথি ও ফোন নম্বর নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই তিন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা। চাকরিহারা শিক্ষিকা সঙ্গীতা সাহা বলেন, ‘আমরা গতবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে পারিনি। কালীঘাট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই সময় জানতে পারি, রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা যেতে পারে। সেই কারণেই রবিবার ম্যাডামের বাড়ির সামনে যাই। মিলন সংঘ ক্লাবের ভিতরে যেতে পেরেছি। সেখানে উপস্থিত অফিসারদের সঙ্গে কথাও হয়েছে। আমাদের নম্বর নেওয়া হয়েছে। তবে ম্যাডামের সঙ্গে কথা হয়নি। তিনি কথা বলতে রাজি হলে, ফোন করা হবে জাননো হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার চাকরিহারা সঙ্গীতা বলেছিলেন, ‘আমরা কোনও আন্দোলন বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে আসিনি। আমরা জানতে এসেছিলাম, ১০ বছর সম্মানের সঙ্গে চাকরি করার পরেও পরীক্ষা দেওয়া কী ভাবে সম্ভব? আমরা কোনওভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যেতে পারিনি। আমাদের যেতে দেওয়া হয়নি। আমরা কোনওভাবেই পরীক্ষা দেব না। আগের পদ আমাদের সসম্মানে ফিরিয়ে দিতে হবে। সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে চিঠি লিখেছি। পুলিশের মাধ্যমে সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে যাবে বলে আশ্বাস পেয়েছি।’
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম নির্দেশ মেনে ৩০ মে এসএসসির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। প্রায় ৩৬ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সমান্তরালভাবে নজর রয়েছে রিভিউ পিটিশনের দিকেও। মঙ্গলবার নবান্নের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে চাকরিহারাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, চাকরিহারাদের পরীক্ষা দিতেই হবে। পরীক্ষা না দিয়ে ‘যোগ্য’দের পুনর্বহাল করা যাবে কি না তা ঠিক করবে শীর্ষ আদালতই। মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়ে রেখেছেন, ভবিষ্যতে রিভিউ পিটিশনের রায় যদি ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের মান্যতা দেয় তাহলে সেটাই কার্যকর করা হবে।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ মেনে ৩০ মে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।