পাঁচ মাসে রেকর্ড বৃষ্টি শিলিগুড়িতে, ডেঙ্গুর বাহক মশার দাপট বাড়ার শঙ্কা
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পাঁচ মাসেই রেকর্ড বৃষ্টি। প্রায় ৬৩৫ মিলিমিটার। ইতিমধ্যে খাল, বিল, নালা জলে টইটম্বুর। তাই ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস ইজিপ্টাইয়ের দাপট বাড়ার আশঙ্কা শিলিগুড়িতে। এজন্য আজ, সোমবার থেকে বাড়ি বাড়ি অভিযানে নামবে ভেক্টর কন্ট্রোল টিম। গতবছরের তুলনায় তারা এবার প্রায় একসপ্তাহ আগে ময়দানে নামছে। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দুলাল দত্ত বলেন, এবার বর্ষা নির্ধারিত সময়ের আগে নেমেছে। তাই ডেঙ্গু দমন অভিযানে আগেভাগে নেমেছি। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষক দল এবং ভেক্টর কন্ট্রোল টিমকে সহযোগিতা করার আবেদন নাগরিকদের কাছে জানানো হয়েছে। সমগ্র বিষয় নিয়ে প্রচার অভিযানও চলছে।
শিলিগুড়িতে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার রাতে ব্যাপক বৃষ্টি হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে বৃষ্টির পরিমাণ ২৭ মিলিমিটার। এনিয়ে জানুয়ারি থেকে মে পাস পর্যন্ত পাঁচ মাসে এখানে বৃষ্টির পরিমাণ ৬৩৪.৮০ মিমি। জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ এবং বিদ্যুতের তার মাটির নীচ দিয়ে পাতার জন্য বেশকিছু এলাকার মাটি খোঁড়া হয়েছে। সেই সব খানাখন্দেও জমেছে জল। পাশাপাশি শহর ও শহরতলিতে রাস্তার ধারে, মাঠ, চা বাগান চত্বর, পার্কের একাংশে জগিয়ে উঠেছে জঙ্গল।
সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে আঁতুড়ঘর তৈরি করতে পারে ডেঙ্গুর বাহক মশা। বিভিন্ন মহলের বক্তব্য, বৃষ্টির জমাজল, ঝোপ-জঙ্গলে মশা আঁতুড়ঘর তৈরি করে। তাই এবার ডেঙ্গুর বাহক মশার দাপট বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, বর্ষা নামতেই শহরে মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। সন্ধ্যার পর ঘরের জানালা খোলা যাচ্ছে না। ঘরে ঝাঁকে ঝাঁকে মশা ঢুকছে।
এই অবস্থায় ডেঙ্গু দমনে আগে ময়দানে নামছে পুরসভা। ইতিমধ্যে তারা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষক দল, সুপারভাইজার ও ভিসিটিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। পুরসভা সূত্রে খবর, জানুয়ারি মাস থেকে এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন। তা হলেও মশাবাহিত এই রোগ মোকাবিলায় ঢিলেমি দিতে নারাজ। তাই আজ, থকে হাউস টু হাউস সমীক্ষা শুরু হবে। বাড়ির ছাদে, পরিত্যক্ত টব ও পাত্রে, ডাবের খোলা, প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, ফয়েল প্যাক, ফ্রিজের আউটলেট প্রভৃতির জমা জল বের করা, বাড়ির চারপাশের জঙ্গল সাফ করা, কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে কি না প্রভৃতি বিষয়ে খোঁজ নেবেন। এজন্য শহরে ৫৪৬টি টিম গড়া হয়েছে। প্রতি টিমে রয়েছে দু’জন করে। এরবাইরে ভিসিটির সংখ্যা ১৩৬টি। তাতে একজন সুপার ভাইজার ও দু’জন করে সাফাই কর্মী রয়েছেন।
পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগেরে মেয়র পরিষদ সদস্য বলেন, এবার নির্দিষ্ট সময়ের ১০-১২ দিন আগে বর্ষা নেমেছে। পাঁচ মাসে গতবছরের তুলনায় বৃষ্টিও বেশি হয়েছে। তাই এবার ডেঙ্গু দমনে কিছুটা আগেই নেমেছি। গত বছর ১০ জুন থেকে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা শুরু হয়েছিল।