• শহিদ বিপুল রায়ের মূর্তিতে ফুল দেননি মোদি, পদ্ম শিবিরের সমালোচনায় রাজবংশী সমাজ
    বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: ২০২০ সালের ১৫-১৬ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যাকায় ভারতীয় এবং চীনা সেনাদের যুদ্ধে শহিদ হয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিন্দিপাড়ার রাজবংশী সেনা জওয়ান বিপুল রায়। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশে শহিদ জওয়ান বিপুল রায়ের পূর্ণাবয়ন মূর্তি বসিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার প্যারেড গ্রাউন্ডে সভা করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শহিদ বিপুল রায়কে শ্রদ্ধা জানাননি। তাঁর মূর্তিতেও ফুল দেননি। প্রধানন্ত্রীর দূত হিসেবে বিপুল রায়ের মূর্তিতে ফুল দিতে জেলা বিজেপিও কাউকে পাঠায়নি। এই ঘটনায় জেলাজুড়ে রাজবংশী সমাজে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। মর্মাহত হয়েছেন রাজবংশীরা। রবিবার বিপুল রায়ের মূর্তির সামনে সেই ক্ষোভই আছড়ে পড়ল জেলার রাজবংশী সমাজের। 

    সেই প্রতিবাদ সভায় শামিল হয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলা মনীষী পঞ্চানন বর্মা স্মারক সমিতি, ওয়েস্ট বেঙ্গল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ড সহ রাজবংশীদের বিভিন্ন গণসংগঠন। প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মন, রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্রক ‘জাতীয় যুবক’-এর শিরোপা পাওয়া রাজবংশী যুবক প্রসেনজিৎ রায়ও। যদিও জেলা বিজেপির বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। 

    পঞ্চানন বর্মা স্মারক সমিতির জেলা সভাপতি সুরেশচন্দ্র রায় বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নই। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি তো নিজেকে চৌকিদার প্রধানমন্ত্রী বলে মনে করেন। সেই চৌকিদার প্রধানমন্ত্রী শহিদ বিপুল রায়ের মূর্তির পাশে সভা করলেন। অপারেশন সিন্দুর নিয়ে ভাষণ দিলেন। অথচ শহিদ জওয়ান বিপুল রায়কে শ্রদ্ধা জানালেন না। আমরা মর্মাহত। আমরা রাজবংশী সমাজ এর নিন্দা জানাচ্ছি। 

    ওয়েস্ট বেঙ্গল রাজবংশী ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ডের কার্যকরী কমিটির সদস্য পীযূষকান্তি রায় প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির দিকে তোপ দেগে বলেন, পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদীরা পর্যটকদের গুলি করে তাঁদের স্ত্রীদের সিন্দুর মুছে দিয়েছে। দেশের অখণ্ডতা রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ বিপুল রায়ের স্ত্রীরও তো সিন্দুর মুছে গিয়েছিল। অথচ প্যারেড গ্রাউন্ডে সভা করতে এসে প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপির বিপুল রায়কে একবারও মনে পড়ল না। আমরা বিজেপির এই অসম্মানের কথা জেলাজুড়ে প্রচার করব। 

    যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি মিঠু দাস বলেন, এটা ঠিক প্রধানমন্ত্রী বিপুল রায়ের মূর্তিতে মালা দেননি। তবে সভায় প্রধানমন্ত্রী আসার আগে সকালে দলের পক্ষ থেকে শহিদের মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে এখন অযথা রাজনীতি করা হচ্ছে। আমাদের ধারণা এতে তৃণমূল কংগ্রেসের ইন্ধন আছে। 

    যদিও প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ওই ঘটনার পিছনে তৃণমূলের কোনও হাত নেই। বিজেপি শহিদ বিপুল রায়ের প্রতি অসম্মান দেখালে রাজবংশী সমাজ তো আহত হবেই।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)