• শ্রাদ্ধবাড়িতে কটূক্তি, যুবককে পিটিয়ে হত্যা, অভিযুক্তদের বাড়িতে ভাঙচুর
    বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: ‘সৎকারে না এসে ভোজ খেতে এসেছে’–এই ছয় শব্দেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল রানিগঞ্জ থানার বক্তারনগর এলাকা। শ্রাদ্ধবাড়িতে এই কথার জেরে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তাঁর প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। অভিযুক্তদের বাড়ি চড়াও হয় বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের বাড়ি লন্ডভন্ড করে দেওয়া হয়। ব্যাপক ভাঙচুর চালানোর সময় জনতাকে আটকাতে গেলে হেনস্তার শিকার হয় পুলিসও। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। রবিবার পুলিস ওই এলাকায় টহল দেয়। ঘটনার পর থেকেই থমথমে গোটা এলাকা।

    ডিসি(সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস বলেন, এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাটি উত্তপ্ত হয়। অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। খুনের অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় পুলিস মোতায়েন করা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার বক্তারনগরে একজনের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান চলছিল। সেই শ্রাদ্ধবাড়ির অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অমিত বাউরি(৩২)। সেখানে পরিমল বাউরি উপস্থিত হতেই কটাক্ষ ছুটে দেয় অমিত। অভিযোগ, অমিত খাওয়া নিয়ে খোঁটা দিতেই দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। পরে দুপুরে অমিত গাছের তলায় শুয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় পরিমল তার দু’ভাইকে নিয়ে এসে অমিতকে ব্যাপক মারধর করে। স্বামীকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে আসেন স্ত্রী রূপাদেবী। তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর অমিতকে প্রথমে রানিগঞ্জের আলুগড়িয়ায় সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসার পর তিনি বাড়ি আসেন। পরে ফের অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। শনিবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অমিতের একটি ছোট সন্তান রয়েছে। বাড়িতে কেউ এলেই রূপাদেবী তাঁকে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘অমিত ভালো আছে তো?’ এই পরিস্থিতিতে উত্তেজিত জনতা পরিমলদের বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়ির সব আসবাবপত্র ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হয়। বাড়ির দরজাগুলি পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের বাড়ির মহিলা সদস্যদের বাঁচাতে পুলিস ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। উত্তেজিত জনতা পুলিসের বাধাও মানেনি। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। অশান্তি করার জন্য দু’জনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিস। যদিও পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন থানা থেকে পুলিস এসে ওই এলাকায় রাতে টহলদারি শুরু করে। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস পরিমলকে গ্রেপ্তার করেছে। তার পরিবারের সদস্য রীতা বাউরি বলেন, অমিত অত্যন্ত নেশাগ্রস্ত ছিল। পরিমলরা খুন করার জন্য মারেনি। অমিত গালিগালাজ করায় দু’-একটা চড় মেরেছিল। কোথাও পড়ে গিয়ে ওর মৃত্যু হতে পারে। আমাদের বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কী অপরাধ ছিল? পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য অমিতের দেহ আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ, সোমবার ময়নাতদন্ত হবে।  ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)