বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামের সড়ক-যোগ, শিলাবতীতে সেতু শীঘ্রই
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: সিমলাপালে শিলাবতী নদীর উপর সেতু নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই সেতুর জন্য জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় বিধায়ক ফাল্গুনী সিংহবাবু জানিয়েছেন। ফলে সেতুর জন্য আর বেশিদিন অপেক্ষা করতে হবে না বলে বিধায়ক দাবি করেছেন। উল্লেখ্য, ওখানে সেতু তৈরির দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরেই সরব রয়েছেন। বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে শিলাবতী নদীর উপর বর্তমানে একটি কজওয়ে রয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই শিলাবতী নদীর জল ওই কজওয়ের উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। ফলে বাস সহ অন্যান্য যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
সাধারণত দু’টি জেলার মধ্যে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য সড়কে কজওয়ে থাকে না। ফলে গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয় বাসিন্দারা তুলছিলেন। তালডাংরা উপ নির্বাচনের সময় নির্বাচনী ইস্তেহারে তৃণমূলের তরফে ওই সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, বাম আমল থেকে প্রতিটি ভোটের মুখে ওই জায়গায় সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি মিলেছে। কিন্তু, নির্বাচন মিটলেই বিষয়টি নিয়ে কারও হেলদোল দেখা যায় না। তৃণমূল সরকারের সেতু তৈরির উদ্যোগের বিষয়টিকে স্থানীয়রা সাধুবাদ জানিয়েছেন। দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শুরুর দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন।
বিধায়ক বলেন, শিলাবতী নদীর উপর ওই সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ৩২ কোটি টাকা প্রয়োজন। আগে কয়েকবার সমীক্ষার কাজ হয়েছে। তবে কাজ শুরু হয়নি। এবার রাজ্য সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সিমলাপাল ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে জমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে নির্দেশ এসেছে। প্রয়োজনীয় জমির দাগ নম্বর চিহ্নিতকরণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। তারপর জমি অধিগ্রহণের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। সেতু নির্মাণের জন্য ধাপে ধাপে অর্থ বরাদ্দ করা হবে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাজ্য সড়ক ধরে প্রতিদিন বাঁকুড়া থেকে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন রুটে শতাধিক বাস চলাচল করে। ওই কজওয়ে বাঁকুড়ার সঙ্গে সিমলাপাল, সারেঙ্গা, রাইপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার যোগাযোগ রক্ষা করে। সিমলাপাল ব্লক এলাকাকে শিলাবতী নদী দু’টি ভাগে ভাগ করেছে। ফলে বর্ষায় কজওয়ে জলে ডুবে গেলে দু’পাড়ের মানুষ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বছর পনেরো আগে রাইপুরের ফুলকুসমা এলাকায় ওই রাজ্য সড়কে কংসাবতী নদীর উপর কজওয়ে ছিল। ওইসময় সেখানে জলের তোড়ে একটি বাস ভেসে যায়। তাতে অনেকে হতাহত হয়েছিলেন। সিমলাপালেও ওই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারীদের মধ্যে চিন্ময় পাত্র, রামানন্দ চক্রবর্তী বলেন, বর্ষা ও নিম্নচাপের সময় সামান্য বৃষ্টিতেই কজওয়ের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করে। তখন বাইক, সাইকেল সহ অন্যান্য ছোট গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। জলস্তর বৃদ্ধি পেলে বাস চলাচল করে না। তখন আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি জেনে ভালো লাগছে। দ্রুত সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। ওই সেতু নির্মাণ হলে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। নিজস্ব চিত্র