ভোটকেন্দ্রের ভিতরে মোবাইল নয়, কমিশনের নতুন দাওয়াই, শপিংমলের ধাঁচে টোকেন ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার আটকাতে টোকেন ব্যবস্থা চালু করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেইমতো ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে মোবাইল রাখার ব্যবস্থা করা হবে। সেখানেই মোবাইল জমা রেখে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন ভোটাররা। তার পরিবর্তে ভোটারদের একটি করে টোকেন দেওয়া হবে। ভোট দিয়ে বেরিয়ে টোকেন দেখালে তবেই মোবাইল ফেরত পাওয়া যাবে। স্বেচ্ছাসেবকরা এই মোবাইল ফোন সংগ্রহ ও ফেরতের কাজে সহায়তা করবেন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের তরফে এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ব্যবস্থা দেখা যায় বিভিন্ন শপিং মলে। সেখানে ক্রেতাদের নির্দিষ্ট জায়গায় ব্যাগ জমা রাখতে হয়। তার পরিবর্তে টোকেন মেলে। তবে, মোবাইল জমা রাখার জন্য ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক কোথা থেকে জোগাড় হবে, সেই নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। কারণ, আসন্ন উপনির্বাচনে কালীগঞ্জ বিধানসভায় ৩০৯টি বুথ রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতীতে বিভিন্ন সময়ে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটদানের নানা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। নির্বাচনের সময় অনেক ভোটারই মোবাইল সঙ্গে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে যান। ইভিএমে ভোট দেওয়ার সময়, তাঁরা নির্দিষ্ট প্রতীকের বোতাম টেপার মুহূর্তটি ছবি বা ভিডিও করে নেন। পরে তা সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করেন। এধরনের আচরণ ভোটের গোপনীয়তা ও নির্বাচনী শৃঙ্খলাকে ভঙ্গ করে। সেই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোলও পড়ে। মনে করা হচ্ছে, ভোটকেন্দ্রের ভিতরের ছবি, ভিডিও ফাঁস হওয়া আটকাতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের আগে মোবাইল ফোন জমা দেওয়ার জন্য ছোট বাক্স কিংবা পাটের থলে ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১০টি মোবাইল রাখা যাবে। সাধারণত কেন্দ্রে একসঙ্গে চার-পাঁচজন ভোটার থাকেন। সেই দিকটি বিবেচনা করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মোবাইল সংরক্ষণের ব্যবস্থাটি শুধু ভোটারদের জন্যই প্রযোজ্য হবে। পোলিং এজেন্ট, পোলিং অফিসার সহ অন্য কেউই এর আওতায় থাকছেন না। ভুলবশত কোনও ভোটার জমা রাখা মোবাইল ফেরত নিতে ভুলে গেলে, স্বেচ্ছাসেবকরা ভোট শেষের পর তা বুথ লেভেল অফিসারের কাছে জমা করবেন। সেই অফিসার সংশ্লিষ্ট টোকেন যাচাই করে মোবাইল ফোন ফেরত দেবেন।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনও বুথে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা স্বেচ্ছাসেবকের অনুপস্থিতির কারণে মোবাইল ফোন জমা রাখার ব্যবস্থা করতে না পারলে, সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার তা থেকে কেন্দ্রটিকে অব্যাহতি দিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে ভোটকেন্দ্রের ১০০মিটারের মধ্যে শুধুমাত্র বন্ধ অবস্থায় মোবাইল ফোন বহন করা যাবে। কেন্দ্রের ভিতরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া আরও সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। - নিজস্ব চিত্র