চাপড়া থানা এলাকায় পরপর চুরিতে আতঙ্ক, পুলিসের ভূমিকা নি়য়ে ক্ষোভ
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: চাপড়া থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক চুরির ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাতের অন্ধকারে ধারাবাহিক চুরির ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কখনও মসজিদে, কখনও দোকানে আবার কখনও টোটো চুরির ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় পুলিসের নজরদারির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
সম্প্রতি চাপড়ার সাতমাইল এলাকা থেকে চুরি যাওয়া একটি টোটো উদ্ধার করেছে পুলিস। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে আশরাফুল মণ্ডল ও মহম্মদ মণ্ডল নামে দুই যুবক। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই অভিযুক্ত পূর্ব বর্ধমানের মেমারি এলাকা থেকে চুরি করা টোটো নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সেখান থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগেও কাঠগোলাপাড়া এলাকার একটি মসজিদে বড়সড় চুরির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, কয়েক লক্ষ টাকার তহবিল মসজিদের নির্দিষ্ট ঘরে সংরক্ষিত ছিল, সেখান থেকেই রাতের অন্ধকারে তা চুরি যায়।
চুরির ঘটনায় বড়সড় আলোড়ন সৃষ্টি হয় মার্চ মাসেও, যখন বড় আন্দুলিয়া এলাকায় পরপর তিনটি দোকানে হানা দেয় চোরেরা। প্রথমে রাজ্য সড়কের পাশে একটি বিল্ডার্সের দোকানে জানালার গ্রিল কেটে নগদ অর্থ নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপর একটি ব্যাঙ্কের দিকে অগ্রসর হলেও, মূল গেটের তালা না ভাঙতে পারায় ঢুকতে পারেনি। পরে রাস্তার উল্টোদিকে একটি তেলের দোকান এবং পাশে থাকা পাটের গুদাম থেকেও নগদ অর্থ ও ক্যাশ বাক্স চুরি করে চোরের দল পালিয়ে যায়। এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের দাবি, রাতের বেলায় টহল ও নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। তাঁরা মনে করছেন, পুলিসের নজরদারির ঘাটতির সুযোগ নিয়েই চুরি বাড়ছে।
চাপড়ার স্থানীয় বাসিন্দা মহিম শেখ বলেন, মাঝেমধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটছে। রাতের অন্ধকারে চোরেরা ঘরের মধ্যে ঢুকে জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ভয় পাচ্ছি। চাপড়ার এলাকাবাসীর দাবি, এলাকার একাংশ যুবক মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে এবং সেই নেশার জোগান দিতেই চুরির পথ বেছে নিচ্ছে। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এই প্রবণতা বেশি। তিনি জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসে শোন পুকুর এলাকা থেকে প্রায় ১০০ কেজি গাঁজা বাজেয়াপ্ত করেছিল পুলিস। এছাড়াও কাশির সিরাপ, গাঁজার মতো মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়েছে বারবার।
এদিকে পুলিস প্রশাসন তাদের তরফ থেকে পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে। ‘বন্ধু’ নামক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করা হয়েছে, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা যুক্ত। যেকোনও সন্দেহজনক বা অপ্রীতিকর কিছু দেখলেই সেখানে খবর দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এক আধিকারিক জানান, চুরির ঘটনা ঘটলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই। ইতিমধ্যেই একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় নজরদারি আরও বাড়ানো ও পুলিসের তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি উঠেছে সর্বত্র। - ফাইল চিত্র