• অনলাইন শেয়ার মার্কেটিংয়ে ৫০ লক্ষ খুইয়ে নিঃস্ব প্রাক্তন স্কুলকর্মী
    বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: অনলাইন শেয়ার মার্কেটিংয়ে আকর্ষণীয় মুনাফার টোপ গিলে ৫০ লক্ষ টাকা খোয়ালেন চণ্ডীপুর থানা এলাকার এক ব্যক্তি। তিনি একটি স্কুলের অশিক্ষক কর্মী ছিলেন। সদ্য অবসর নিয়েছেন। গত ২৮ মে তিনি এনিয়ে চণ্ডীপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন। তারভিত্তিতে পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। দু’টি আলাদা স্টক ট্রেডিং ও ইনভেস্টমেন্ট সংস্থার অনলাইন ফাঁদে পড়ে তিনি ওই টাকা খুইয়েছেন। গত মার্চ মাসে একটি সংস্থার হাতে খুইয়েছেন ৩৬লক্ষ ৪০হাজার টাকা। এপ্রিল মাসে অন্য একটি সংস্থার মাধ্যমে তিনি আরও ১৪লক্ষ ৫০হাজার টাকা খুইয়েছেন।

    চণ্ডীপুর থানার ওসি দীপককুমার অধিকারী বলেন, আমরা ওই ব্যক্তির কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। কয়েক দফায় তিনি ৫০লক্ষ ৯০হাজার টাকা দিয়েছেন। যেসব অ্যাকাউন্টে তাঁর টাকা ট্রান্সফার হয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

    জানা গিয়েছে, গত ১০মার্চ প্রতারিত ওই ব্যক্তি একটি অনলাইন ট্রেডিং হাব থেকে মেসেজ পান। তাতে অনলাইনে শেয়ার ট্রেডিং ও ইনভেস্টমেন্টে ভালো ‘প্রফিটে’র টোপ দেওয়া হয়। সেই মেসেজে তিনি আগ্রহ দেখান। এরপরেই তাঁকে একটি অনলাইন গ্রুপে যুক্ত করা হয়। অনলাইন ট্রেডিংয়ের উপর প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি অ্যাপ ইনস্টল করেন এবং এজন্য আইডি নম্বর পান। এরপরেই নিয়মিত হোয়াটসঅ্যাপে বিনিয়োগের জন্য শেয়ার অফার করে। পৃথক একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এক মহিলা তাঁকে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়মিত গাইড করতেন বলে স্কুলের এই প্রাক্তন করণিক পুলিসকে জানিয়েছেন।

    গত ১৫এপ্রিল থেকে ১৭মে পর্যন্ত ১৩দফায় তিনি ৩৬লক্ষ ৪০হাজার টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তাঁর অ্যাকাউন্টে যথেষ্ঠ প্রফিট দেখালেও সেই টাকা হ্যাক করে তুলে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। তিনি প্রথম পাঁচ দফায় আট লক্ষ ২০হাজার টাকা দিয়েছেন। সেই টাকা উদ্ধারের জন্য গাইডের নির্দেশে পর পর আরও টাকা দিয়েছেন। এভাবেই ওই অনলাইন স্টক মার্কেট সংস্থায় তিনি ৩৬লক্ষ ৪০হাজার টাকা খুইয়েছেন। নিজের জমানো টাকা ছাড়াও বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ধার করে বিনিয়োগ করেছেন। এখন পাওনাদাররা রোজ তাঁর কাছে টাকা চাইছেন।

    গত ২৬এপ্রিল তিনি আরও একটি অনলাইন স্টক মার্কেট সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হন। আবারও সেই ভালো প্রফিটের অফার। লোভ সংবরণ করতে পারেননি। ২৬-৩০এপ্রিল তিন দফায় পাঁচ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেন। সেই টাকার প্রফিট তুলতে গেলে ট্যাক্স বাবদ অনেকটা টাকা বাদ যাবে বলে ভয় দেখানো হয়। তাঁকে আরও বেশি টাকা বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়। এভাবে ২৬এপ্রিল থেকে ৭মে পর্যন্ত মোট সাত দফায় ১৪লক্ষ ৫০হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন। যদিও কানাকড়িও ফেরত পাননি। প্রতারিত হয়েছেন নিশ্চিত হওয়ার পরই তিনি চণ্ডীপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেন।

    প্রতারিত ওই ব্যক্তি বলেন, আমি শুরুতে যে টাকা বিনিয়োগ করেছিলাম তা ফেরত পেতে ধারাবাহিকভাবে টাকা দিয়েছি। এভাবে ৫০লক্ষ টাকা খুইয়েছি। নিজের জমানো টাকা ছাড়াও অন্যদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি। খোয়া যাওয়া টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য থানার দ্বারস্থ হয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)