• নতুন কাটা পুকুরের মাটি ফেলে অন্য জলাশয় ভরাটের চেষ্টা দুবরাজপুরে
    বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি:নতুন পুকুর কাটতে গিয়ে পুরনো জলাশয় ভরাটের চক্রান্ত! ঘটনাটি দুবরাজপুর ব্লকের লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের ঘাট গোপালপুর এলাকার। অভিযোগ, নির্মীয়মাণ পুকুরের মাটি সংলগ্ন এলাকার বহু পুরনো একটি জলাশয়ে ফেলা হচ্ছে। ক্রমাগত মাটি ফেলার জেরে জলাশয়ের অস্তিত্বই এখন প্রশ্নের মুখে। ঘটনায় বৃহস্পতিবার সরাসরি জেলাশাসকের দ্বারস্থ হল পদ্ম শিবির। রীতিমতো লিখিতভাবে জেলাশাসককে ইমেল মারফৎ চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ জানালেন দুবরাজপুর ৪ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই চিঠিতে তিনি পুকুর ভরাট বন্ধ করার আবেদন জানিয়েছেন। ঘটনা প্রসঙ্গে জেলাশাসক বিধান রায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

    লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারি অর্থ খরচে জেলা পরিষদের তরফে ঘাট গোপালপুর এলাকায় পুকুর কাটার কাজ শুরু হয়েছে। বিগত ১০ দিন ধরে পুকুর কাটার কাজ চলছে। গ্রীষ্মের শুরুতেই পুকুর কাটার কাজ শুরু হওয়ায় ওই এলাকার সাধারণ মানুষ যথেষ্টই খুশি। এমনকী শাসক বিরোধী উভয় শিবিরের নেতারাই এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। যদিও নতুন পুকুর কাটার কাজ চলাচালীন সংলগ্ন এলাকার পুরনো জলাশয় ভরাটের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। অভিযোগ নির্মীয়মাণ পুকুরের মাটি ট্রাক্টরে করে পুরনো জলাশয়ে ফেলা হচ্ছে। ঘটনায় উদ্বিগ্ন পদ্ম শিবিরের নেতারা। দলীয় নেতৃত্বের দাবি, ওই জলাশয়টি বাস্তবে একটি পুকুর। সাধারণ মানুষের জলের চাহিদা মেটাতে বাম আমলে ওই পুকুর তৈরি করা হয়েছিল। যদিও সেই পুকুর বর্তমানে ভরাটের চেষ্টা চলছে। প্রসঙ্গত, দুবরাজপুর ব্লকে সাম্প্রতিক অতীতেও পুকুর ভরাটের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছিল। সেসময় বিজেপির তরফে পুরসভা এলাকায় পুকুর ভরাটের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছিল। এবার ফের পুকুর ভরাটের অভিযোগ একই ব্লকে। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

    শম্ভুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পুকুরটি ভরাটের চেষ্টা চলছে। আমাদের আশঙ্কা শাসকদলের মদতেই ভূ-মাফিয়ারা এই কাজ করছে। যদিও ওই এলাকাতেই নতুন একটি পুকুর কাটার কাজ শুরু হয়েছে। তবে আইনত এভাবে পুকুর ভরাট করা যায় না। আমি লিখিতভাবে বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি। আশা করছি, জেলাশাসকের হস্তক্ষেপে বাম আমলে তৈরি পুকুরটি আগের রূপে ফিরবে। 

    এদিকে বিজেপির তরফে উঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, এটা সরকারি প্রকল্পের কাজ। সরকারি নিয়ম মেনে আধিকারিকদের পর্যবেক্ষণে কাজ চলছে। যদি কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকে, সঠিক জায়গায় তাঁরা দরখাস্ত করতেই পারেন। প্রশাসন নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে। এখানে দলের কোনও বিষয় নেই। দল কাউকেই রেয়াত করবে না। অন্যদিকে, জেলা পরিষদের কৃষি সেচ ও সমবায় স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম খান বলেন, সঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)