জামাইষষ্ঠীর সকালে মাংসের দোকানের ভিড়ে ঢুকল বেপরোয়া গাড়ি, জখম ৬
বর্তমান | ০২ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: জামাইষষ্ঠীর সকাল। দোকানে দোকানে ভিড়। সবচেয়ে বেশি ভিড় মাংসের দোকানে। এই দিনে জামাইদের রসনা তৃপ্ত করতে চেষ্টায় খামতি রাখেন না শ্বশুরবাড়ির লোকজন। হাবড়ার বাইপাস রোডে খাসির মাংসের দোকানের সামনে সকাল থেকে যথারীতি লম্বা লাইন। মাংস নিয়ে ঘরে ফেরার জন্য তাড়া সবারই। এই সময় যে এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যাবে, কে জানত! মাংস নিয়ে ঘরে ফেরার কথা ছিল যাঁদের, তাঁদের মধ্যে ছ’জনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল! বিশ্বজিৎ সরকার নামে গুরুতর জখম একজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ হাবড়ার ২ নম্বর রেলগেট লাগোয়া বাইপাসে একটি খাসির মাংসের দোকানের সামনে দুর্ঘটনা ঘটে। দোকানের সামনে তখন বিশাল লম্বা লাইন। কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে ফোন ঘাঁটছিলেন, কেউ জেরবার হচ্ছিলেন ভ্যাপসা গরমে। লাইনের অবস্থা দেখে কয়েকজন সেখানে দাঁড়িয়েই খোশগল্প জুড়ে দিয়েছিলেন। কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে চলে গিয়েছিলেন পাশের দোকানে চা খেতে। সেই সময় দ্রুতগতিতে ধেয়ে আসা একটি চারচাকা গাড়ি ধাক্কা মারে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ক্রেতাদের। অনেকেই রক্তাক্ত হলেন। কয়েকজন গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে গিয়ে পড়লেন মূল সড়কে। তখন কারও হাত ফেটে রক্ত পড়ছে। কেউ কাতরাচ্ছেন পা ভাঙার যন্ত্রণায়। ছ’জনের আঘাত বেশ জোরালো হওয়ায় তাঁদের তড়িঘড়ি হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিশ্বজিৎ সরকারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, হাবড়ার জয়গাছির বাসিন্দা রতন সাহা যশোর রোডে চারচাকা গাড়ি চালানো শিখছিলেন। হাবড়া ২ নং রেলগেট থেকে দিক পরিবর্তন করে বাইপাস রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। তখনই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাসির মাংসের দোকানের সামনে লাইনে থাকা ক্রেতাদের ধাক্কা মারে গাড়িটি। পুলিস জানিয়েছে, ইতিমধ্যে রতন সাহাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতও জানিয়েছেন, তিনি গাড়ি চালানো ভালোভাবে জানেন না। শিখছিলেন তিনি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মনোতোষ সরকার বলেন, ‘আচমকা একটা বিকট শব্দ করে চারচাকা গাড়িটি সবাইকে ধাক্কা মারল। গাড়ির গতি অনেক ছিল। নতুন গাড়ি চালানো শিখছে, তাতেই এই গতি! অবাক হচ্ছি।’ দোকানের কর্মচারী দুলাল কর্মকার বলেন, ‘প্রচুর চাপ ছিল সকাল থেকেই। বাইরের দিকে তাকানোর সুযোগই হয়নি। কীভাবে যে গাড়িটা সোজা লাইনে ধাক্কা মারল, বুঝতেই পারলাম না। এখন শুনছি, ওই যুবক গাড়ি চালানো শিখছিলেন। তাহলে তো এই ব্যস্ত রাস্তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত ছিল।’ খুশির দিনে এমন ঘটনা আনন্দ মাটি করে দিয়েছে।