সুমন ঘোষ, খড়্গপুর
দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। আর ২০২৬–এর ওই ভোটকে পাখির চোখ করে বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে চাইছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল। দলে শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বুথস্তর থেকে নতুন মুখ তুলতে চাইছে শাসক দল। ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অজিত মাইতি।
সম্প্রতি ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুদাইতকে সরিয়ে অজিত মাইতিকে জেলা সভাপতি করেছে তৃণমূল। অজিত সাংগঠনিক জেলা ভাগ হওয়ার আগে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই এ বার দলের সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। অজিত জানান, প্রতি বুথ থেকে ৫ জন নতুন মুখ তুলে আনা হবে। যাঁরা নিজের এলাকায় দলের নীতির কথা ও সরকারি উন্নয়নের কথা প্রচার করবেন। তিনি বেকার যুবক, চাকরিজীবী কিংবা সমাজসেবী হতে পারেন। তবে এলাকায় যেন তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি থাকে।
কিন্তু সে ক্ষেত্রে গোষ্ঠীকোন্দল আরও বাড়বে না তো? অজিত বলছেন, ‘দলে নতুন কর্মী জরুরি। পুরোনো কর্মীদেরও প্রয়োজন। দু’পক্ষকেই হাত ধরাধরি করে চলতে হবে। বিরুদ্ধাচারণ করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে দল ব্যবস্থা নেবে।’ দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু এলাকাতেই দলের কিছু পুরোনো কর্মীদের আচরণে মানুষ বিরক্ত। তাঁদের কারও কারও বিরুদ্ধে আবার দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। ফলে নতুন মুখ না এলে ভোটবাক্সে তার প্রভাব পড়তে পারে।
দ্বিতীয় যে বিষয়টিতে জেলা সভাপতি জোর দিয়েছেন তা হলো, কোনও নেতার অনুগামী হয়ে অন্যকে আক্রমণ করা চলবে না। কোনও নেতাকে কোনও কর্মীর ভালো লাগতেই পারে। তাঁর সঙ্গে সখ্য হতে পারে। কিন্তু সে জন্য অন্য কোনও নেতাকে অসম্মান করা যাবে না। দলের কারও সঙ্গে মনোমালিন্য হতেই পারে। তবে তা প্রকাশ্য মিটিংয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বা সংবাদমাধ্যমে বলা যাবে না। তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে দলকে। অজিতের কথায়, ‘প্রয়োজনে সরাসরি আমার কাছে এসেও বলতে পারেন। কিন্তু প্রকাশ্যে একে অন্যের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়ছুড়ি করে দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হলে দল তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।’
ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার মধ্যে রয়েছে একাধিক ব্লক। ঘাটাল মহকুমার যেমন ৫টি ব্লক রয়েছে তেমনই মেদিনীপুর ও খড়্গপুর মহকুমার কেশপুর, ডেবরা, সবং, পিংলা প্রভৃতি। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দলও রয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে ঘাটালে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। যে কারণে এ বার ঘাটালকে বিশেষ ভাবে গুরুত্বূ দেওয়া হচ্ছে। জেলা সভাপতির কথায়, ‘এ বার আমাদের প্রথম লক্ষ্য ঘাটাল বিধানসভায় জয়। অন্য বিধানসভায় জয়ের ব্যবধান বাড়াতে হবে।’ ঘাটালে এ বার একটি জেলা পার্টি অফিস তৈরির চেষ্টাও চলছে। দলের এই সব পরিকল্পনা ও নির্দেশের কথা জেলা, ব্লক, পুরসভা থেকে বুথস্তরের কর্মীদের জানাতে আগামী রবিবার ঘাটালে একটি কর্মিসভারও আয়োজন করা হচ্ছে। '