মিল্টন সেন, হুগলি: প্রায় ১২ দিনের মাথায় নিখোঁজ মাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন মেয়ে। চিকিৎসার জন্য স্ত্রীকে দিল্লি নিয়ে যেতে বিভ্রান্তির সূত্রপাত। দিনটা ছিল ২০ মে সকাল। রিজার্ভেশন করা ছিল। বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুর থেকে ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল দিল্লি। স্ত্রী নিলম ঝাঁ (৫৮)–র সঙ্গে স্টেশনে পৌঁছে জামালপুরে কর্মরত রেলের কর্মী বিলাশ ঝাঁ লক্ষ করেন রেলের পাশ তিনি বাড়িতে ভুলে এসেছেন। স্ত্রীকে ষ্টেশনে বসিয়ে বাড়ি আসেন। এরপর তড়িঘড়ি পাশ নিয়ে স্টেশনে পৌঁছে দেখেন তাঁর স্ত্রী সেখানে নেই। তন্ন তন্ন করে স্টেশন চত্বর খুঁজেও স্ত্রীর খোঁজ পাননি। অভিযোগ জানানো হয় রেল পুলিশে। জানানো হয় জিআরপি থানায়, স্থানীয় থানায়। পাঁচ মেয়ের সঙ্গে বাবা অনেক দৌড়াদৌড়ি করেন, কোনও খোঁজ পাওয়া যায় না। ছবি সহযোগে পোস্টার লাগানো হয় স্টেশন চত্বরে। খোঁজ দিতে পারলে পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করা হয়।
এদিকে, গত ২৬ মে দিল্লি রোডের ধারে গুরুতর জখম এবং সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এক মহিলাকে উদ্ধার করে ডানকুনি থানার পুলিশ। তাঁকে ভর্তি করা হয় শ্রীরামপুর ওয়ালস হাসপাতালে। চিকিৎসায় ক্রমশই সুস্থ হয়ে ওঠেন ওই মহিলা। কিন্তু কিছুতেই তাঁর নাম ঠিকানা বলতে পারেননি। নাম বলতে না পারার কারণে অজানা রুগী হিসেবেই হাসপাতালে মহিলা বিভাগে ভর্তি রাখা হয় তাঁকে। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বাসুদেব জোয়ারদার গত শুক্রবার বিষয়টি জানান হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের কাছে। হ্যাম রেডিওর নেটওয়ার্ক বিহারের মুঙ্গের জেলায় ওই মহিলার পরিবারকে খুঁজে বের করে ফেলে। ছবি দেখানো হলে চিনতে পারেন সকলেই। কান্নায় ভেঙে পরে মেয়েরা। তার পর ট্রেন ধরে সোমবার তাঁরা মাক নিয়ে বিহার ফিরে যান। মেয়েদের অভিযোগ, বিহারের পুলিশ তাঁদের কোনও রকমের সাহায্য করেনি। বাংলার পুলিশ তাঁর মাকে বাঁচিয়েছে। আর হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের মাকে খুঁজে পেয়েছেন।