কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: সন্ধেয় পুলিশকে হুমকি। সকালে হুমকি প্রত্যাহার। রাত পেরতে না পেরতেই ইউ টার্ন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের। সোমবার মুর্শিদাবাদের একাধিক থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আশ্বস্ত হয়ে মন্তব্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই দাবি বিধায়কের।
রবিবার বহরমপুরের দলীয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। ওই অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে পুলিশকে নিশান করেন। বলেন, “লালগোলা, বড়ঞা, সামশেরগঞ্জ, ভরতপুর থানায় এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটে যাতে সাধারণ মানুষের হয়রানি হয়। যদি বিরোধী আসনে থাকতাম ২৪ ঘণ্টা সময় লাগত না শায়েস্তা করতে। কিন্তু আমরা সরকারে রয়েছি। আমার হাতে পায়ে বেড়ি পরানো রয়েছে, তাই কিছু করতে পারছি না।” বিধায়কের এই মন্তব্য নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় জোর চর্চা। এরপর সোমবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে যান বিধায়ক। একাধিক থানার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগ নিয়ে আলোচনা করেন হুমায়ুন কবীর। বিধায়কের দাবি, জেলা পুলিশ সুপার তাঁকে অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। তাতে আশ্বস্ত হয়েই হুমকি প্রত্যাহার করেন বিধায়ক।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একেবারে কদর্য ভাষায় বোলপুরের আইসিকে আক্রমণ করেন তিনি। যার অডিও ক্লিপ সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। দল তাঁকে চার ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেয়। মাত্র ৩৮ মিনিটের মধ্যে ক্ষমা চেয়ে নেন অনুব্রত। সুব্রত বক্সির কাছেও ছোট্ট চিঠি লিখে ক্ষমা চেয়ে নেন দাপুটে নেতা। তবে তা সত্ত্বেও বারবার পুলিশি তলব এড়াচ্ছেন অনুব্রত। শনি ও রবিবার পরপর দু’বার পুলিশি তলবে সাড়া দেননি তিনি। শনিবার অনুব্রতকে ‘অসুস্থ’ বলে দাবি করেন তাঁর আইনজীবীরা। আবার রবিবার বলা হয় তৃণমূল নেতা ‘বেড রেস্টে’ থাকায় হাজিরা দিতে পারছেন না। আদতে কেন তলবে সাড়া দিচ্ছেন না প্রাক্তন জেলা তৃণমূল সভাপতি, স্বাভাবিকভাবে চলছে জোর চর্চা। সূত্রের খবর, আগাম জামিনের আবেদনে হয়তো সোমবারই আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন তৃণমূল নেতা। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ঠিক কেমন শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে, তা স্পষ্ট নয়। এই আবহেই পুলিশকে আক্রমণ করে বিপাকে পড়ার আতঙ্কে কি অবস্থান বদল করলেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক? স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।