• পুড়ছে তিলোত্তমা! সুস্থ রাখতে শীতপ্রধান দেশের প্রাণীদের আলিপুরে না আনার সিদ্ধান্ত
    প্রতিদিন | ০২ জুন ২০২৫
  • নিরুফা খাতুন: দিনদিন অসহনীয় হয়ে উঠছে কলকাতার আবহাওয়া। তাপমাত্রা যেন লাগামছাড়া। চিড়িয়াখানার আবাসিকদেরও স্বস্তি নেই। অসহনীয় গরমে তারাও হাঁসফাঁস করছে। ঘরে কুলার, বরফ দিয়েও গরম কাটছে না হিমালয়ান ভল্লুক ও ক্যাঙারুদের। শহরে গরম বেড়ে যাওয়ায় পেঙ্গুইনের মতো শীতপ্রধান দেশের বাসিন্দাদের আর নিয়ে আসতে চাইছে না আলিপুর কর্তৃপক্ষ। বরং দাবদাহ থেকে মুক্তি দিতে আলিপুরে থাকা শীতপ্রধান দেশের অতিথিদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে উত্তরবঙ্গে। ইতিমধ্যে আলপাকাকে দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় পাঠানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই হিমালয়ান ভল্লুকদের উত্তরবঙ্গে পাঠানো হবে।  

    জানা যাচ্ছে, অসহনীয় গরমে আলিপুরে আলপাকার কষ্ট বাড়ছিল। টানা রোদে থাকায় ঝরে পড়ছিল দেহের লোম। অস্বস্তিকর পরিবেশে স্বাস্থ্যহানি হওয়ার আশঙ্কায় তাকে দার্জিলিংয়ের পদ্মজা নাইডু হিমালয়ান জুলজিক্যাল পার্কে পাঠানো হয়েছে। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা অরুণ মুখোপাধ্যায় জানান, কলকাতায় গরম আর আগের মতো নেই। এখন গরমের আলপাকা দক্ষিণ আমেরিকার তৃণভোজী প্রাণী। পার্বত্য এলাকায় তাদের বাস। পেরুর পার্বত্য এলাকায় ৩৫০০ থেকে ৫৫০০ মিটারে তাদের বাস। আলপাকার লোম দিয়ে দামি উল তৈরি হয়। সেই উলের লোভে পাচারকারীদের নজর থাকে পেরুর এই তৃণভোজীর উপরে। গত অক্টোবরে নদিয়া বানপুর সীমান্তে পাচারের সময় আলপাকাকে উদ্ধার করে বনদপ্তরের হাতে তুলে দিয়েছিল বিএসএফ। কাঁটাতারে মই দিয়ে তাকে ভারতে পাচার করা হচ্ছিল। উদ্ধারের পর বেথুয়াডহরিতে রাখা ছিল। পরে তাকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পাকাপাকি থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আলিপুরে তীব্রতা অনেক বেশি। শীতপ্রধান দেশের অতিথিরা আর এই আবহাওয়া সহ্য করতে পারছে না। হিমালয়ান ভল্লুকরা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের ঘর ঠান্ডা রাখতে কুলার, বরফের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্নানের জন্য জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবু তাদের স্বস্তি মিলছে না।

    এই কারণেই নতুন করে শীতপ্রধান দেশের অতিথিদের আলিপুরে নিয়ে আসা হবে না। আলপাকাকে ইতিমধ্যে দার্জিলিংয়ে পাঠানো হয়েছে। হিমালয়ান ভল্লুকদেরও বেঙ্গল সাফারিতে পাঠানো হচ্ছে। তাদের ছাড়পত্রও এসে গিয়েছে। বর্তমানে আলিপুরে চারটি হিমালয়ান ভল্লুক রয়েছে। দুটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রী। যার মধ্যে ২০২২ সালে বাংলাদেশে পাচারের সময় উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থেকে দুই ভল্লুক শাবককে উদ্ধার করে আলিপুরে নিয়ে আসা হয়েছিল। তখন তাদের বয়স ছিল মাত্র দু’মাস। দুই ভাই জগাই-মাধাইয়ের জন্য গত আগস্টে নন্দনকানন থেকে দুটি স্ত্রী হিমালয়ান ভল্লুক নিয়ে আসা হয়। হিমালয়ান ভল্লুক শীতপ্রধান এলাকায় থাকে। তবে কুলার ও বরফের ব্যবস্থা থাকলে তারা কলকাতার গরম মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু এখন কলকাতার গরমের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে। সেজন্য তাদের আলিপুর থেকে উত্তরবঙ্গে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বেঙ্গল সাফারিতে তিনটি হিমালয়ান ভল্লুক রয়েছে। আলিপুর থেকে আপাতত দুটি পাঠানো হবে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)