মেডিক্যাল কলেজ ‘ছাত্র সংসদ’ নির্বাচন: এমসিডিএসএ-ই বড় ব্যবধানে জিতল, ডিএসও পেল একটি আসন, অন্যেরা দু’টি
আনন্দবাজার | ০২ জুন ২০২৫
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনে বড় জয় মেডিক্যাল কলেজ ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বা এমসিডিএসএ-র। ২০টির মধ্যে ২০টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছিল তারা। সোমবার সন্ধ্যায় ফল বেরোতে দেখা গেল, মোট ১৭টি আসনে জয়ী হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের মূল এই সংগঠনটি। এ ছাড়া একটি আসনে জয় পেয়েছেন এসইউসিআইয়ের ছাত্র সংগঠন ডিএসও-প্রার্থী। ব্যক্তিগত ভাবে লড়ে দু’টি আসন পেয়েছেন দু’জন।
দীর্ঘ টালবাহানার পরে সোমবার সকালে মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদের ভোট হয়। ভোটারের সংখ্যা ছিল এক হাজার। বিকেল পর্যন্ত ভোট পড়ে ৭৭.৮ শতাংশ। এই নির্বাচনে বিভিন্ন সংগঠন এবং ব্যক্তি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও শাসকদল তৃণমূল কোনও প্রার্থী দেয়নি। বরং তারা এই নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে। বস্তুত, ছাত্র সংসদের নির্বাচনকে ‘নির্বাচন’ বলতেই নারাজ তৃণমূলের জুনিয়র ডাক্তারদের সংগঠন। তাদের অভিযোগ, এই নির্বাচনের বিষয়ে স্বাস্থ্য ভবন বা ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেল্থ সায়েন্সেস, কেউ কিছু জানত না।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের একাংশ। দীর্ঘ ১২ দিন ধরে অনশন চালান কয়েক জন পড়ুয়া। ১২ দিনের মাথায় অনশন প্রত্যাহার করার সময় আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা ঘোষণা করেন, নিজেদের ভোট তাঁরা নিজেরাই করবেন। কিন্তু নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন ওঠে। তখন সমাজের বিশিষ্টদের তত্ত্বাবধানে এই ভোট করানো হয়। সমাজকর্মী ও চিকিৎসক বিনায়ক সেন, অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায় এবং মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্রকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নজরদারি করতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন পড়ুয়ারা। তাতে রাজি হন তাঁরা। শেষমেশ ওই নির্বাচনকে মান্যতা দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এমসিডিএসএ-র দাবি, ২০২৩ সালে পড়ুয়াদের চাপে কলেজ কর্তৃপক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করেন। কিন্তু ২০২৪ সালে আরজি কর-কাণ্ডের জন্য ভোট হয়নি। সংগঠনের এক নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে, ২০২৫ সালের মার্চ মাসে সমস্ত কলেজে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবুও রাজ্যের পক্ষ থেকে এমন কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাই, কলকাতা মেডিকেল কলেজের ছাত্রেরা নির্বাচনের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্দোলন করে। শাসকদল অনেক বাধা সৃষ্টি করেছিল। নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল, তবুও আজ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ‘হুমকি সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে, ক্যাম্পাসের মধ্যে গণতন্ত্র বজায় রাখার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে দেখছি। আমরা চাই, সমস্ত কলেজে এই ধরনের নির্বাচন হোক এবং তাদের নিজস্ব সংগঠন গঠিত হোক।’’