• ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক বোতলে খিদে-তৃষ্ণা মিটবে গাছের পাখিদের, নয়া উদ্যোগ নদিয়ার কলেজের
    আনন্দবাজার | ০২ জুন ২০২৫
  • আশপাশে ছড়িয়ে থাকা পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ চলছিল কয়েক দিন ধরেই। প্লাস্টিক দূষণ রোধে এ হেন কর্মসূচি প্রশংসাও কুড়িয়েছিল পরিবেশ সচেতকদের। তবে এই উদ্যোগের নেপথ্যো শুধু প্লাস্টিক দূষণরোধ নয় অন্য কোনও পরিকল্পনা রয়েছে, তা ঘুণাক্ষরে আঁচ করতে পারেননি কেউই। তীব্র দাবদাহে সেই প্লাস্টিকের বোতলে এ বার থেকে খিদে-তৃষ্ণা মিটবে গাছের ডালে আশ্রয় নেওয়া পাখিদের!

    নদিয়ার আসাননগর মদনমোহন তর্কালঙ্কার মহাবিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগ ও এনএসএস ইউনিটের যৌথ উদ্যোগে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল থেকে প্রায় ২৫০ টি জল এবং খাবারের পাত্র তৈরি করা হয়েছে। সেই পাত্রগুলি ঝোলানো থাকছে কলেজ এবং তার সংলগ্ন বিভিন্ন গাছে। তীব্র দাবদহে গাছের ছায়ায় জল ও খাবারের পাত্র পেয়ে ভিড় জমাতে শুরু করেছে পাখির দল। সে দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় মানুষেরাও।

    কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় পড়ে থাকা প্লাস্টিকের বোতল বিভিন্ন নালায় জমে জল নিকাশি ব্যবস্থা পুরোপুরি আটকে দিচ্ছিল। বর্ষার শুরুতে সেই সব প্লাস্টিক বোতল সংগ্রহ করে রং ও তুলির ছোঁয়ায় সাজিয়েগুছিয়ে তৈরি করা হয়েছিল জল এবং খাবারের পাত্র। প্রায় ২৫০টিরও বেশি এমন পাত্র ঝোলানো হয়েছে আশপাশের গাছগুলিতে। আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক গাছে এই প্রকল্প রূপায়ণের পরিকল্পনা রয়েছে কলেজ পড়ুয়াদের।

    কলেজ ছাত্রী সুপ্রিয়া মণ্ডলের কথায়, “প্রথমে ভেবেছিলাম এটা শুধুই একটা প্রজেক্ট। কিন্তু যখন দেখলাম প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে পাখিরা জল ও খাবার খেতে আসছে, তখন মনে হল এটা দিয়ে অন্য কিছু করার কথা।’’ কলেজের শিক্ষক অনিরুদ্ধ সাহা বলেন, ‘‘এটি আমাদের গ্রিন ক্যাম্পাস অভিযানের একটি অংশ। আমরা চেয়েছি ক্লাসরুমের পঠনপাঠনকে বাস্তব জীবনের সঙ্গে যুক্ত করতে।’’ প্রকল্পটির মাধ্যমে প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহার ও জীব বৈচিত্র্য রক্ষা দুই কার্যকর হবে বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা।

    এলাকাই এক সময় প্রচুর পাখিদের আনাগোনা ছিল। গাছের সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে সমানুপাতিক হারে কমেছে পাখিদের সংখ্যাও। তবুও এলাকার বেশ কিছু বড় গাছে আজও ভিড় জমায় পাখির দল। এলাকার এমন গাছে গাছে জল এবং খবর ভর্তি প্লাস্টিকের পাত্র বাঁধার কাজ প্রায় শেষ। সকাল-বিকাল সেই জলে মুখ ডুবিয়ে স্বস্তি পাচ্ছে জানা-অজানা পাখির দল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)