• অভিনেতারা কি পালন করতে পারেন ‘ন্যাশনাল লিভ দি অফিস আর্লি ডে’? কী জানালেন তৃণা, সুদীপ, অপরাজিতা?
    এই সময় | ০২ জুন ২০২৫
  • ২ জুন একটি মজার দিন। এই দিনে দেশে পালিত হয় ‘ন্যাশনাল লিভ দি অফিস আর্লি ডে’। দিনটির মাহাত্ম্য এমন— সময়ের আগে ছুটি দেওয়া হয় সেই কর্মীদের, যাঁরা সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন। এটি এক ধরনের ‘ইনসেন্টিভ’। দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য একটাই— কর্মীরা যাতে কাজের বাইরে একটু ভালো সময় কাটাতে পারেন। এমন একটি দিন যে আছে, তা শুনেই চোখ কপালে তুললেন টলিপাড়ার তিন ব্যস্ত অভিনেতা। তাঁরা প্রত্যেকেই সিরিয়ালের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। তাঁরা কী বললেন এই সময় অনলাইনকে?

    এমন একটি দিনও যে পালন করা হয়, তা শুনে অবাক অভিনেত্রী তৃণা সাহা। খুব হাসলেন। এই মুহূর্তে ‘পরশুরাম আজকের নায়ক’ সিরিয়ালের নায়িকার চরিত্রে তৃণা। টালিগঞ্জের দাসানি টু স্টুডিয়োয় শুটিংয়ে ব্যস্ত অভিনেত্রী এই সময় অনলাইন-এর ফোন পেয়ে বললেন, ‘ও বাবা, এ রকম দিনও আছে? আমাদের মতো অভিনেতার জন্য এ তো এক ‘এলিয়েন’ বিষয়।’

    সিরিয়ালে অভিনয়ের আগে মন দিয়ে লেখাপড়া করতেন তৃণা। ছিলেন মেধাবী ছাত্রী। কাকতালীয় ভাবে অভিনয় পেশায় এসেছেন। অভিনেত্রী না হলে কর্পোরেটেই চাকরি করতেন তৃণা। তিনি যোগ করলেন, ‘জীবনে প্রথমবার শুনলাম যে, এমনও একটি দিন আছে। আমি যখন লেখাপড়া করার সময়ে ইনটার্নশিপ করছিলাম, এমন একটা দিন আছে জানলে সবার আগে সেলিব্রেট করতাম।’

    কেন সেলিব্রেট করতেন, সেই কারণও জানিয়েছেন তৃণা। প্রাইভেট কোম্পানিতে ইনটার্নশিপ করার সময়ে তাঁকে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি কাজ করতে হতো। বলেন, ‘অন্য এমপ্লয়ির চেয়ে অনেক বেশি কাজ করতাম। ৪০ ঘণ্টার অনেক বেশি। এখন তো দিনটা পালন করার আর কোনও উপায় দেখছি না। টানা শুটিং চলবে। কেরিয়ারে সম্পূর্ণ অন্য পথে হাঁটা দিয়েছি। ফলে দিনটা সেলিব্রেট করার আর কোনও সুযোগ নেই।’

    তৃণা মজার ছলে যোগ করেছেন এবং চেয়েছেন ‘ন্যাশনাল অ্যাক্টার্স লিভ ডে’ পালন করলে কেমন হয়? সেই দিন অভিনেতাদের ছুটি হলে কেমন হয়? বলেন, ‘আমি চাই এই দিনটা আসুক— ‘ন্যাশনাল অ্যাক্টার্স লিভ ডে’। কিন্তু নেই যে, এটাই দুঃখের।’

    কুঁদঘাটের মুভিটন স্টুডিয়োয় ‘চিরসখা’ সিরিয়ালের শুটিংয়ে ব্যস্ত দুই প্রধান অভিনেতা সুদীপ মুখোপাধ্যায় ও অপরাজিতা ঘোষ দাস। অপরাজিতা এই সব ডে-কে তোয়াক্কাই করেন না। তিনি কাজের বিষয়ে খুব সিরিয়াস। যতক্ষণ না কাজ শেষ হচ্ছে, কর্মক্ষেত্র ছেড়ে ছুটি নিতে নারাজ। অভিনেত্রীর সংযোজন, ‘আমাদের এই ধরনের দিন পালনের লাক্সারি নেই। আমরা অভিনেতা। শো বিজ়নেসে সেটা থাকাও কাঙ্খিত নয়। নিখুঁত কাজ পেতে হলে শিল্পীর দক্ষতাই শেষ কথা। ফলে কাজ থাকলে, যত দেরিই হোক না কেন, সেটা শেষ করেই আমাদের ছুটি। তার আগে শুটিং ফ্লোর ছেড়ে বেরনোর পক্ষপাতী নই।’

    অভিনেত্রী না হয়ে যদি আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো চাকরি জীবন কাটাতেন অপরাজিতা, তা হলেও ‘ন্যাশনাল লিভ দি অফিস আর্লি ডে’র বিষয়টিকে আমল দিতেন না। জানিয়েছেন, কাজ শেষ না করে বাড়ি চলে আসার মানুষ তিনি নন, সে যে পেশাই হোক না কেন।

    অপরাজিতার সহ-অভিনেতা সুদীপ আবার বিষয়টিকে অন্য চোখে দেখেন। এমন এক দিনের কথা শুনে প্রথমেই হাসলেন। বলেই দিলেন, ‘আমাদের তো অফিস নেই। শুটিং ফ্লোরটাই সব। ফলে ‘লিভ দ্য ওয়ার্কিং প্লেস আর্লি’র কনসেপ্ট নেই। সেটা অনেক সময়ে এমনিই হয়ে যায়। সিন শেষ হলে সময়ের আগেও বাড়ি চলে আসি। আবার অনেক দেরিও হয়।’

    প্রাইভেট কোম্পানির উচ্চপদস্থ বসেরা দিনটিকে সাদরে গ্রহণ করবেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুদীপ। তাঁর বক্তব্য, ‘বসেরা কি এই দিনটাকে মন থেকে মেনে নিতে পারবেন? একটি ডিপার্টমেন্টের অধিকাংশ কর্মীই যদি আজ সময়ের আগে অফিসে ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, তাঁরা কি ছুটি মঞ্জুর করবেন? যদি করেন, খুবই ভালো, দিনটার যর্থার্থ স্বার্থকতা!’
  • Link to this news (এই সময়)