টিকিট না কেটেই ট্রেনে সফর করার প্রবণতা আছে অনেক যাত্রীর। তাঁদের ধরার জন্য আছেন টিকিট পরীক্ষকও। কিন্তু এই যাত্রীদের ধরে হয়রান করছেন ‘ভুয়ো টিটিই’-রা। তাদের খপ্পরে প্রতারিত হচ্ছেন যাত্রীরা। তাঁদের দৌরাত্ম্য রুখতেই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশন। টিটিইদের ইউনিফর্মে লাগানো হচ্ছে বিশেষ ব্যাজ। রেলের দাবি, যাত্রী নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় এই বিশেষ পদক্ষেপ করার পরেই পাওয়া যাচ্ছে সাফল্য। নতুন এই ব্যবস্থা চালু করার পরে দু'জন ভুয়ো টিটিই ধরা পড়েছে।
কী এই বিশেষ ব্যাজ?
রেলের তরফে জানানো হয়েছে, টিকিট পরীক্ষকদের ডিউটিতে থাকার সময়ে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে কিউআর কোডযুক্ত ব্যাজ। প্রতিটি ব্যাজের পিছনে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করলেই একজন টিকিট পরীক্ষকের সমস্ত তথ্য মুহূর্তের মধ্যে জানা যাবে। কোনও যাত্রীর সন্দেহ হলে কর্তব্যরত টিটিই আসল কী না তা সঙ্গে সঙ্গেই যাচাই করে নিতে পারবেন। কারণ কোডে টিকিট পরীক্ষকদের নাম, আইডি নম্বর থেকে শুরু করে সমস্ত নথি দেওয়া আছে। এই ব্যাজ যাতে কেউ নকল করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
পূর্ব রেলের দাবি, শিয়ালদহ ডিভিশনেই এই কিউআর কোড যুক্ত ব্যাজ লাগানো প্রথম চালু হয়েছে। এই বিশেষ ব্যাজ চালু করা হয়েছে শিয়ালদহ ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার জসরাম মীনার উদ্যোগে।
কীভাবে পাওয়া যাচ্ছে সাফল্য?
রেল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই নতুন ব্যাজ চালু করার পরে সম্প্রতি দু'জন ভুয়ো রেল কর্মচারীকে সনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আধিকারিকরা জানান, প্রথম ঘটনাটি ঘটে ৫৩১৭৫ শিয়ালদহ–লালগোলা প্যাসেঞ্জার-এ। এক ব্যক্তি নিজেকে টিটিই বলে পরিচয় দেওয়ার পরে যাত্রীরা তাঁর কাছে নতুন চালু হওয়া অফিসিয়াল ব্যাজ দেখতে চান। তখনই তিনি নার্ভাস হয়ে সন্দেহজনক আচরণ করেন । তারপরেই নিজেকে ভিজিল্যান্স অফিসার বলে দাবি করেন তিনি। ট্রেনের যাত্রীরাই বিষয়টি জানান রেলকর্মীদের। সঙ্গে সঙ্গে সঞ্জয় ঘোষাল নামের ব্যক্তিকে করে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণনগর সিটি জংশন-এর আরপিএফের কাছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
অন্য ঘটনাটি ঘটে শিয়ালদহ দক্ষিণের লক্ষ্মীকান্তপুর স্টেশনে। সেখানেও এক ব্যক্তি যোগ করে যাত্রীদের কাছে টিকিট চাইছিলেন। তাঁর কাছে ওই ব্যাজ দেখতে চান রেলের কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত জানা যায় তিনিও ভুয়ো টিটিই। তাকে তুলে দেওয়া হয় রেলপুলিশের হাতে।
রেল আধিকারিকদের দাবি
শিয়ালদহর ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার রাজীব সাক্সেনা বলেন, ‘নতুন ব্যাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে সত্যিকারের টিটিইদের চিহ্নিত করা যেমন সহজ হয়েছে, তেমনই সাধারণ যাত্রীরাও এখন ভুয়োদের শনাক্ত করতে পারছেন। এর ফলে টিটিইদের স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতাও বাড়বে।’