নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: এলইডি স্ক্রিনে চলছে কার্টুন। ভিডিও চালিয়ে চেনানো হচ্ছে বাংলা, ইংরেজি বর্ণমালা। টিফিনে ছাতুর লাড্ডু, মধ্যাহ্নভোজে পুষ্টিকর খাবার সঙ্গে ওয়াটার পিউরিফায়ারের পরিস্রুত পানীয় জল। মালদহে সাড়ে ছ’শো ‘সক্ষম’ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার চালু হওয়ার পর ৯০ শতাংশ বাচ্চাই এখন সেন্টারমুখী।
জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের হস্তক্ষেপে চালু হওয়া সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারগুলিতে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আগের থেকে অনেক বেশি বাচ্চা স্কুলমুখী হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় মোট ৫ হাজার ৭২৩ টি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার আছে। এর মধ্যে থেকে তিন হাজারের কাছাকাছি সেন্টারের নিজস্ব জমি বা ঘর আছে। তার মধ্যে ৬৫০টি সেন্টারকে সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
একটি সক্ষম সেন্টারকে সরকার ৭৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। যা দিয়ে বাচ্চাদের জন্য একটা বড় এলইডি টিভি, পরিস্রুত পানীয় জলের জন্য ওয়াটার পিউরিফায়ার কেনা হয়েছে। নারী ও শিশু কল্যাণ দপ্তরের আর্থিক সাহায্যে ৩৯ হাজার টাকা দিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে। সাড়ে ছ’শোর মধ্যে বহু সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। সেখানে নতুন করে সংযোগ নেওয়া হয়েছে।
পরিকাঠামো ও পরিষেবার অভাবে এতদিন সেন্টারগুলিতে বাচ্চাদের অনুপস্থিতির হার বেশি ছিল। সক্ষম সেন্টার চালু হওয়ার পর নব্বই শতাংশ বাচ্চা সেন্টারমুখী হয়েছে। আগে মায়েরা এসে বাচ্চাদের খাবার সংগ্রহ করে নিয়ে যেতেন। সেই খাবার আদৌ বাচ্চারা কতটা খেতে পারত, তা বোঝার উপায় ছিল না। তাছাড়া এলইডি স্ক্রিনে ভিডিও চালিয়ে খেলার ছলে পড়ানোর ফলে বাচ্চাদের আগ্রহ বেড়েছে। তারা সেন্টারমুখী হয়েছে এবং ‘স্পট ফিডিং’ করছে, অর্থাৎ সেন্টারে বসেই নিজের খাবার নিজেই খাচ্ছে। ফলে বাচ্চাদের পুষ্টি এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি দেখা গিয়েছে।
মালদহ জেলার পুরাতন মালদহে ৫০, হবিবপুরে ৮০, মানিকচকে ২২, রতুয়া -১ এবং -২ নম্বর ব্লকে ৫০ ও ৩২ টি, চাঁচল-২ নম্বর ব্লকে ৩২, কালিয়াচক-২ এ ১৬ টি, ইংলিশবাজার ব্লকের গ্রামাঞ্চলে ৪৫ টি, হরিশ্চন্দ্রপুর -১ ব্লকে ৩৪, কালিয়াচক -১ ব্লকে এ ২৩, চাঁচল -১ ব্লকে ৮২ টি, হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকে ৩১, বামনগোলায় ৭৫ এবং কালিয়াচক-৩ ব্লকে ২০ টি ও গাজোলে ৫৭ টি সক্ষম অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার চালু করা হয়েছে। পরে এই সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র।