নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: খড়্গপুর-২ ব্লকের চককেশী রাধানাথ কৃষি সমবায় সমিতির ভোটে বিপুল জয় পেল তৃণমূল। এই জয়ে উচ্ছ্বসিত ঘাসফুল শিবিরের নেতা-কর্মীরা। জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই সমবায় সমিতির ন’টি আসনের সবকটিতেই জয়ী হয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। বিজেপি ও সিপিএম প্রার্থী দিলেও তারা জিততে পারেনি।
এই সমবায় সমিতির আধিকারিকরা জানান, কয়েক মাস আগে থেকেই ভোটের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত ১৬ ও ১৭মে মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা র কাজ শেষ হয়। এরপর ১৯মে স্ক্রুটিনির পর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়। ন’টি আসনেই তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী দিয়েছিল। ছ’টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল সিপিএম। গত ৩০মে ভোট হয়। মোট ভোটারের সংখ্যা ৭০২। তাতে জয়লাভ করে তৃণমূল।
জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষ বলেন, বিরোধী শিবিরের চোখ রাঙানি, অত্যাচার মানুষ দেখেছে। মানুষ উন্নয়নের সঙ্গেই আছে, তা আবারও প্রমাণিত হল। এই সমবায় সমিতির পাশে সর্বদা ছিলাম। আগামী দিনেও থাকব।
জেলা বিজেপির সহ সভাপতি শঙ্কর গুছাইত বলেন, সমবায় সমিতির ভোট কীভাবে হয় মানুষ জানে। স্বচ্ছতার সঙ্গে ভোট হলেই তৃণমূল হেরে যাবে।
খড়্গপুর-২ ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত বেরা বলেন, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ থাকাকালীন নির্মলবাবু এই সমবায় সমিতিকে প্রচুর সহযোগিতা করেছেন। নির্মলবাবুর সহযোগিতায় এই সমবায় সমিতি কৃষি সরঞ্জাম কিনতে সক্ষম হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৯২৬ সালে চককেশী রাধানাথ কৃষি সমবায় সমিতি তৈরি হয়। কৃষক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সমবায় সমিতির পথ চলা শুরু। তৎকালীন সময়ে রাধানাথ বেরার ছেলে হরেকৃষ্ণ বেরা এই সমবায় সমিতির জন্য জমি দান করেছিলেন। শুরুতে সমবায় সমিতির কোনও অফিস ছিল না। এলাকার মানুষের বাড়িতেই বসত অফিস।
শতবর্ষীয় এই সমবায় সমিতির আমানতের পরিমাণ প্রায় ৮ কোটি টাকা। এই সমবায় সমিতির মাধ্যমে টাকা লেনদেন, ঋণদান ছাড়াও ধান কেনার কর্মসূচিও পালন করা হয়। বর্তমানে এই সমবায় সমিতির ধান কাটার মেশিন, ট্রাক্টর রয়েছে। এর মাধ্যমেও উপকৃত হন চাষিরা। এছাড়া রোগী ও পরিজনদের সুবিধার্থে সমবায় সমিতি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও দিয়ে থাকে।
খড়্গপুর-২ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তৃষিত মাইতি, স্থানীয় সাঁকোয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তাপস মাইতি বলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। স্থানীয় বিধায়ক অজিত মাইতি বলেন, বিরোধী শিবিরের সংগঠন বলে কিছুই নেই। দীর্ঘদিন ধরে এই সমবায় সমিতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অতুলচন্দ্র বেরা ও স্বপন কুণ্ডু। তাঁরা বলেন, শেষ কয়েক বছরে এই সমবায় সমিতি সবচেয়ে বেশি বিকশিত হয়েছে। এই সমবায় সমিতির মাধ্যমে বহু গরিব মানুষ উপকৃত হচ্ছে। -নিজস্ব চিত্র