• জল বাড়লেই ডোবে রাস্তা, কংসাবতী নদীতে সেতুর দাবি
    এই সময় | ০৩ জুন ২০২৫
  • এই সময়, ডেবরা: নদীতে জল বাড়লেই ডোবে রাস্তা। ফলে প্রতি বছর সেই রাস্তা নির্মাণ করতে হয় প্রশাসনকে। শুধু তাই নয়, ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয় মানুষজনকে। বৃষ্টি শুরু হয়েছে। জল বাড়ছে কংসাবতীতে।

    এ বারও যাতায়াতে সমস্যায় পড়ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের ট্যাবাগেড়িয়ার বাসিন্দারা। তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবি, ট্যাবাগেড়িয়ায় কংসাবতীর উপর একটি সেতু করা হোক। কিন্তু সেই ইচ্ছা আজও মেটেনি।

    বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রত্যেকবার ভোট এলে নেতা–মন্ত্রীরা এসে সেতুর প্রতিশ্রুতি দেয় ঠিকই। কিন্তু ওই পর্যন্তই। কাজের কাজ কিছুই হয় না।

    এ প্রসঙ্গে ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি প্রদীপ কর জানান, সেতু নির্মাণের জন্য ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর উদ্যোগী হয়েছেন। কাজ অনেকটা এগিয়েছে বলেও জানান তিনি।

    ডেবরার তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সেতু নির্মাণের বিশদ প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। তা মঞ্জুরও হয়েছে। সেতুর জন্য নদীর দু’দিকে সংযোগকারী রাস্তা তৈরি করতে প্রায় ৬.২ একর জমির প্রয়োজন। সেই জমি কেনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছে।’

    সূত্রের খবর, এই সেতু নির্মাণের জন্য প্রায় ৩১ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। সংযোগকারী রাস্তা তৈরির জন্য জমি দিতে তৈরি অনেকেই। সে–কথা তাঁরা লিখিত ভাবেও জানিয়েছেন। তবে কিছু পরিবার জমি দিতে নারাজ বলে অভিযোগ।

    বিধায়ক আরও বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নের জন্য সকলেই রাস্তা নির্মাণের জমি দেবেন বলে আমরা আশাবাদী। জমি কেনার টাকা এলেই জমি কেনার কাজ শুরু হবে।’

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঁসাই নদীর এক পারে রয়েছে ভবানীপুর, সত্যপুর, মলিঘাটি এবং গোলগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত। আর অন্য পারে রয়েছে সত্যপুর, খানামোহন, ডেবরা ১-সহ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত।

    সেতু না-থাকায় বর্ষায় যাতায়াতে ভরসা নৌকো। নদীর জল বাড়লে ১০-১৫ কিলোমিটার পথ ঘুরে ডেবরা আসতে হয় নদীর অন্য পারের মানুষদের। জল কমলে নদীর বুকের উপরে তৈরি করা হয় মোরামের রাস্তা।

    স্থানীয় ব্যবসায়ী ভোলানাথ সাউটিয়ার কথায়, ‘এতটা ঘুরে যাতায়াতে সময় নষ্ট হয়। খরচও বাড়ে। একটা ট্রাকে মাল আনতে গেলে বেশি ভাড়া গুনতে হয়। সেতু হলে এই সমস্যাগুলো থাকবে না।’

    ট্যাবাগেড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রণবেশ ঘোড়ই বলেন, ‘স্থানীয় মানুষের জন্য এই সেতুটি ভীষণ জরুরি। ভবানীপুর, ভরতপুর, সত্যপুর এবং খানামোহন— এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের নিত্য যোগাযোগ এই পথেই।’

    এই সেতু হলে ডেবরা, পটাশপুর হয়ে দিঘা যাওয়ার পথও সুগম হবে। ডেবরা ব্লকের দুবরাজপুরে একটি ছোট্ট সেতু নির্মাণ করলেই এই পথটি তৈরি হয়ে যাবে।

    বিধায়কের কথায়, ‘দিঘায় জগন্নাথ মন্দির হওয়ার পরে মানুষের উৎসাহ বেড়েছে। এখন বীরভূম, বর্ধমান বা হুগলির মানুষকে দিঘা যেতে হলে অনেকটা ঘুরপথে যেতে হয়। এই সেতু তৈরি হলে শুধু ডেবরার মানুষ নন, অন্য জেলার মানুষও উপকৃত হবেন। তাই আমরাও আপ্রাণ চেষ্টা করছি প্রথমে ট্যাবাগেড়িয়া সেতুটি তৈরি করতে। তারপর দুবরাজপুরেও সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেব।’

  • Link to this news (এই সময়)