• মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় হামলা, একই দিনে ওই এলাকায় ব্যবসায়ীর মৃত্যু! জোড়া খুন দক্ষিণ ২৪ পরগনায়
    আনন্দবাজার | ০৩ জুন ২০২৫
  • একই দিনে জোড়া খুন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বকুলতলা থানা এলাকায়। দুই পৃথক ঘটনায় দুই ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায়। প্রথম ঘটনা মদ্যপানকে কেন্দ্র করে বচসা, হাতাহাতি এবং পরে মৃত্যু। আর দ্বিতীয় ঘটনা পুরনো বিবাদের জেরা ব্যবসায়ী খুন। এই জোড়া খুনের তদন্ত শুরু করেছে বকুলতলা থানার পুলিশ।

    রবিবার রাতে বকুলতলা থানার বুইচবাটি গ্রামে মদ্যপানকে কেন্দ্র অশান্তির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ, গ্রামের কয়েক জন যুবক মদ্যপ অবস্থায় গালিগালাজ করছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতেই হামলার শিকার হন এলাকার বাসিন্দা ইউসুফ খান-সহ বেশ কয়েকজন। সোমবার সকালেও সেই অশান্তির রেশ ছিল। আবার প্রতিবাদীদের উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, মহব্বত কুতুবউদ্দিন দল সোমবার সকালে হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় তিন জন গুরুতর জখম হন। ইউসুফ ছাড়াও আহতেরা হলেন সুফিয়া খান এবং সায়েম খান।

    গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে সায়েমের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। প্রথমে তাঁকে নিমপীঠ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাঁকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকেরা। যদিও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারি এবং শাস্তির দাবিতে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান স্থানীয়েরা।

    স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই অসামাজিক কার্যকলাপ বাড়ছে এবং মদ্যপ অবস্থায় উপদ্রব নতুন কিছু নয়। রবিবার রাতের ঘটনায় আরও দুই ব্যক্তি আহত হন বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষে মোট পাঁচ জন আহত হয়েছেন। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    অন্য দিকে, এই বকুলতলা এলাকাতেই প্রতিবেশীর হাতে খুন হন এক মৎস্য ব্যবসায়ী। বকুলতলা থানার অন্তর্গত ফুটিগোদা অঞ্চলের দোসরা ভগবানপুর এলাকার বাসিন্দা রাজকুমার হালদারের খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে তিনি প্রতিবেশী বলরাম অধিকারীর বাড়ির সামনে একটি ছোট মন্দিরে মেঝেতে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই সময় হঠাৎ ধারালো অস্ত্র নিয়ে বলরাম তাঁর উপর আক্রমণ চালান। রাজকুমারের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পাড়া-প্রতিবেশীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় রাজকুমারকে নিয়ে যাওয়া হয় নিমপীঠ শ্রীরামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে, কিন্তু পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

    খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন, রাজকুমার এবং বলরামের মধ্যে দীর্ঘদিনের কোনও দ্বন্দ্ব ছিল না। তবে কয়েক দিন আগে গরুর খাবার নিয়ে দু’জনের মধ্যে বচসা হয়েছিল। কেউ কেউ জমি সংক্রান্ত পুরনো বিবাদের কথাও উল্লেখ করছেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। খুনের ঘটনার পরই নিজেই থানায় আত্মসমর্পণ করে অভিযুক্ত। পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)