অর্পিতা হাজরা
বীরভূমের বোলপুরের আইসিকে ফোনে হুমকি দিয়ে চর্চায় অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআইয়ের সন্দেহ, তিনি এবং তাঁর অনুগামীরা যে কোনও সময়েই হুমকি, শাঁসানি দিতে পারেন গোরুপাচার মামলার সাক্ষীদের।
কেষ্টর হুমকি ফোনের অডিয়ো ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পরই তাই বাড়তি সতর্ক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গোরুপাচার মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে জামিনে মুক্ত রয়েছেন অনুব্রত। তিনি কোনও ভাবে ওই মামলার সাক্ষীদের বোলপুরের আইসি–র মতোই হুমকি দিচ্ছেন না তো।
তা জানতে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর শুরু হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে। কারণ সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা মনে করেছেন, যে ভাবে বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারকে ফোনে হুমকি, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছেন অনুব্রত, তাতে গোরুপাচার মামলার সাক্ষীদেরকেও হুমকি দেওয়া তাঁর পক্ষে অস্বাভাবিক নয়।
গোরুপাচার মামলায় তদন্তকারীদের আশঙ্কা, গোরুপাচার মামলার যে সব সাক্ষীদের উপর বিচারপ্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, তাঁদের কোনও ক্ষতি হলে মামলায় তার প্রভাব পড়বে। সিবিআই সূত্রে খবর, এই মামলায় প্রায় ৭০ জন সাক্ষীর নাম চার্জশিটে রয়েছে। এঁদের বয়ানও নিয়েছে সিবিআই।
এই মামলায় সাক্ষীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে, তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা শুরু করছে সিবিআই। সিবিআইয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘গোরুপাচার মামলায় বীরভূমের কোনও সাক্ষীকে হুমকি দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সিবিআইকে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। ই-মেল, ফ্যাক্স বা লিখিত ভাবে এই অভিযোগ জানাতে পারবেন তাঁরা।’
ওই আধিকারিক জানান, কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে সিবিআইয়ের তরফে দিল্লির সদর দপ্তরে জানানো হবে। প্রয়োজনে এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হবে সিবিআই। গোরুপাচার মামলার সাক্ষী ছাড়াও বোলপুরের আশপাশের অনেক বাসিন্দারই সিবিআই বয়ান নিয়েছিল।
এঁরা অভিযোগ জানিয়েছিলেন, অনুব্রত জোর করে তাঁদের জমি কেড়ে নিয়েছেন। আইসিকে হুমকির পর আতঙ্কিত তাঁরাও। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কড়া অবস্থান, কোনও হুমকি এলেই দ্রুত সিবিআইকে জানাতে হবে।
গোরুপাচার মামলায় অনুব্রতর জামিনের সময়ে আদালতের শর্ত ছিল, কোনও ভাবেই এই মামলার কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করা যাবে না। আইসিকে হুমকি ফোনের পরে সেই শর্ত অনুব্রত লঙ্ঘন করতে পারেন, এটা আগাম অনুমান করেই সিবিআইয়ের এই পদক্ষেপ। ২০২২–এর ১১ অগস্ট গোরুপাচার মামলায় অনুব্রতকে গ্রপ্তার করে সিবিআই। দেড় বছর পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পান তিনি।