আজকাল ওয়েবডেস্ক: টানা বৃষ্টি এবং ভূমিধসের কারণে উত্তর-পূর্ব ভারতে বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যেই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৬ জন। টানা দুর্যোগে ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন অন্তত ৫.৫ লক্ষ মানুষ। দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসম। এখানে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ২২টি জেলার ৫.৩৫ লক্ষেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে শ্রীভূমি, কাছাড় এবং নগাঁও। বর্তমানে রাজ্যের ১৬৫টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৩১,০০০ মানুষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় ১২,৬১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৯৪টি গবাদি পশুর। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা বন্যা কবলিত লক্ষিমপুর জেলা পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, অরুণাচল প্রদেশের ওপরের দিকে অবস্থিত নর্থ ইস্টার্ন ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডে রংগানাদি বাঁধ থেকে একসঙ্গে অনেকটা জল ছেড়ে দেওয়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জরুরি মেরামতির পাশাপাশি বর্ষার পর বাঁধগুলির পুনঃনির্মাণের আশ্বাস দেন। প্রবল বন্যায় ফলে রাজ্যের রেল, সড়ক ও জলপথ পরিবহনও বিঘ্নিত হয়েছে।
মজুলি ও জোড়হাটের মধ্যে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফেরি পরিষেবা। শিলচর থেকে ট্রেন পরিষেবাও বাতিল করা হয়েছে জলাবদ্ধতার কারণে। অরুণাচল প্রদেশেও পরিস্থিতি ভয়াবহ। রাজ্যজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। রাজ্যের ২৩টি জেলায় প্রায় ৯০০ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পশ্চিম কামেং, দিবাং ভ্যালি, পাপুম পারে সহ একাধিক জেলায় নদীগুলি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ভারতীয় মৌসম ভবনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সাত দিনে উত্তর-পূর্ব ভারতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। ৩ জুন থেকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ভীত স্থানীয় বাসিন্দারা।