শারীরিক সমস্যার কারণে তিনি এসডিপিও দপ্তরে হাজিরা দিতে পারেননি। সোমবার তিনি ‘এই সময় অনলাইন’-কে জানিয়েছিলেন, মঙ্গলেই কোভিড টেস্টের কথা ভাবছেন। কিন্তু এ দিনও করোনা পরীক্ষা করাননি বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
এ দিন তিনি বলেন, ‘আগের থেকে ভালো আছি। তবে কাশি এখনও পুরোপুরি কমেনি। কোভিড টেস্ট করাইনি। ঘর থেকে বেরোতেই পারিনি।’ বোলপুরের আইসি লিটন হালদারকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করার অভিযোগ উঠেছিল অনুব্রতর বিরুদ্ধে। আর ফোনে সেই কথোপকথনের অডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে। রাজ্যের শাসকদলও ঘটনায় ওই নেতার পাশে দাঁড়ায়নি। ঘটনায় দলের নির্দেশে ক্ষমাও চান কেষ্ট।
এই অডিয়ো কাণ্ডের জেরে অনুব্রত মণ্ডলকে নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠায় পুলিশ। কিন্তু এসডিপিও অফিসে যান অনুব্রতর আইনজীবী। রবিবার তাঁর আইনজীবী মেডিক্যাল সার্টিফিকেটও জমা দিয়ে আসেন। সেখানে লেখা ছিল, ‘৫ দিন বেড রেস্টে থাকতে হবে কেষ্ট মণ্ডলকে।’ যদিও সেই সার্টিফিকেট নিয়েও একগুচ্ছ বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ মলয় পিটের শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক সেই সার্টিফিকেট দেন।
গত ৩১ মে, রাত ৯টা ১৩ মিনিটে ইস্যু করা ওই মেডিক্যাল সার্টিফিকেটে ডাক্তার হিসেবে সই রয়েছে জনৈক এইচ চৌধুরীর। যাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর— WBMC87845। এই রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে সার্চ করতে যে তথ্য উঠে আসে ডাক্তার হিটলার চৌধুরীর নাম। যিনি চিনের কুনমিং থেকে ডাক্তারি পাশ করে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে নাম নথিভুক্ত করেছেন। হিটলার চৌধুরী নামে এক চিকিৎসক বর্তমানে রামপুরহাট-১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক (BMOH)। হিটলার চৌধুরী এবং এই বিএমওএইচ কি একই ব্যক্তি? জল্পনা তৈরি হয়েছে এখানেই। কারণ, যদি বিএমওএইচ–ই ‘শান্তিনিকেতন মেডিক্যালে’র প্যাডে সার্টিফিকেট দিয়ে থাকেন, সেটা কি তিনি করতে পারেন? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
রামপুরহাটের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ শোভন দে মঙ্গলবার বলেন, ‘আমি কোনও অভিযোগ পাইনি। তাই এখনই এই নিয়ে আর কোন মন্তব্য করছি না।’
তবে গোটা ঘটনায় ফের নতুন করে বিতর্ক দানা বাঁধছে। কেষ্টর গ্রেপ্তারি দাবি করে চাপ বাড়াচ্ছে বিরোধীরা। এখন তদন্তকারীরা কী করবেন, সেটাই দেখার।
(তথ্য সহায়তা: হেমাভ সেনগুপ্ত, ঋতভাস চট্টোপাধ্যায়)