• তাজপুর বন্দর আদানিকে দিলই না রাজ্য, নতুন টেন্ডার ডাকবে মমতা সরকার
    আজ তক | ০৪ জুন ২০২৫
  • Adani Tajpur Tender: তাজপুর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প পাচ্ছে না আদানি গোষ্ঠী। নাম প্রত্যাহার করে ফের নতুন করে টেন্ডার ডাকার সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সরকারি সূত্রে খবর। ফলে ২০২২ সালে আদানি গোষ্ঠীকে যে ‘লেটার অফ ইনটেন্ট’ দেওয়া হয়েছিল, তা কার্যত বাতিল হয়ে গেল।

    এর আগেই চলতি বছর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই প্রকল্পের বিষয়ে সরকার আইনি পরামর্শ নিচ্ছে। তার আগে ২০২৩ সালের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করবে রাজ্য সরকার। টেন্ডার মূল্য প্রায় ২৫,০০০ কোটি টাকা।

    এই প্রকল্প ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। এবার আদানির নাম সরকারিভাবে বাতিল করে ফের নতুন দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্তে রাজ্য প্রশাসনের। 

    এদিকে, সম্প্রতি আদানি পোর্টের শেয়ারও কিছুটা নিম্নমুখী হয়েছে। সেটা অবশ্য অন্য কারণে। সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে— আদানি গোষ্ঠী গুজরাটের মুন্দ্রা বন্দরের মাধ্যমে ইরানের এলপিজি ভারতে আমদানি করেছে। এরপরেই শেয়ারে প্রভাব পড়ে। যদিও আদানি গোষ্ঠীর দাবি, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।  
    সোমবার আদানি গোষ্ঠী জানিয়ে দিয়েছে, তাদের কোনও বন্দর দিয়ে ইরান বা ইরানের মালিকানাধীন কোনও জাহাজের পণ্য পরিবহণ করা হচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানিয়েছে আাদানি গোষ্ঠী। 

    স্টক এক্সচেঞ্জ ফাইলিংয়ে সংস্থা জানিয়েছে, তারা কোনও ইরানের মালিকানাধীন জাহাজ পরিচালনা করে না।

    উল্লেখ্য, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মুন্দ্রা বন্দর থেকে পারস্য উপসাগরের মধ্যে চলাচলকারী কিছু ট্যাঙ্কার নিষেধাজ্ঞা এড়াতে বিশেষ কৌশল ব্যবহার করছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে সন্দেহের জেরে ইরানের তেল বা তৈলজাত পণ্য কেনাবেচার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আমেরিকা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, নিয়ম ভেঙে সেই কাজেই সহায়তা করছে আদানি পোর্টস।

    যদিও এই বিতর্কের প্রভাব দেখা গিয়েছে শেয়ারের বাজারে। মঙ্গলবার আদানি গোষ্ঠীর একাধিক শেয়ারে বড় পতন হয়। আদানি পোর্টস, NDTV এবং আদানি এনার্জির শেয়ারে ২ শতাংশেরও বেশি পতন হয়েছে। আদানি পাওয়ারের পতন হয়েছে ২.০২ শতাংশ, আদানি এন্টারপ্রাইজেসের পতন ১.৮৯ শতাংশ। আদানি টোটাল গ্যাস ১.৬২ শতাংশ, আদানি গ্রিন ১.৫৮ শতাংশ, আম্বুজা সিমেন্টস ০.৮৮ শতাংশ, ACC ০.২২ শতাংশ এবং AWL Agri Business-এর পতন হয়েছে ০.০৬ শতাংশ।

    মঙ্গলবার এনএসই নিফটি ১৭৪.১০ পয়েন্ট বা ০.৭০ শতাংশ কমে পৌঁছেছে ২৪,৫৪২.৫০-এ। বিএসই সেনসেক্স ৬৩৬.২৪ পয়েন্ট বা ০.৭৮ শতাংশ কমে ৮০,৭৩৭.৫১-এ ক্লোজ হয়েছে।

    সোমবারের ফাইলিংয়ে যদিও আদানি গোষ্ঠী স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা কোনও নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে ইরানি এলপিজি-র বাণিজ্যে জড়িত নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও তদন্তের কথাও তারা জানে না। তাদের দাবি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই রিপোর্ট ভুল অনুমান ও জল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

    তাজপুর বন্দরের দরপত্র বাতিল এবং শেয়ার বাজারে পতনের প্রেক্ষিতে আদানি গোষ্ঠীর জন্য এই সপ্তাহের শুরুটা বেশ সমস্যাবহুলই বলা চলে।
  • Link to this news (আজ তক)