কাজের বরাত দেওয়ার জন্যে নির্দিষ্ট ঠিকাদারকে দিয়ে চিঠি তৈরি করছিলেন সরকারি আধিকারিকরা। সে সময়ে সরকারি পোর্টালের ভিতর ঢুকে আধিকারিকরা দেখেন, মূল দরপত্রটিই বাতিল হয়ে গিয়েছে। এর পর মেমারি ১-এর বিডিও শতরূপা দাস বৃহস্পতিবার সেই খবর পেয়ে মেমারি থানায় সাইবার-প্রতারণার অভিযোগ করেন। বিডিওর চিঠির প্রতিলিপি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক, এসডিও (বর্ধমান দক্ষিণ) ও মেমারি ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে দেওয়া হয়। কিন্তু বিডিও-র অজান্তেই সরকারি পোর্টালে ঢুকে কী ভাবে পুরো টেন্ডার প্রক্রিয়া বাতিল হলো? তা নিয়ে ধন্দে খোদ জেলাপ্রশাসন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি থানা এ ঘটনার তদন্তে জেলা সাইবার অপরাধ দমন শাখার সাহায্য চেয়েছে। সেই সঙ্গে প্রশাসন সরকারের ওই পোর্টালের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানতে চেয়েছে, তৃতীয় পক্ষ ওই পোর্টালের ভিতর ঢুকে কী ভাবে দরপত্র বাতিল করল? পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েষা রানি এ বলেন, ‘পুলিশকে জানানো হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।’
বিডিও জানিয়েছেন, তাঁর কাছে খবর আসার পরই তিনি ওই সরকারি পোর্টালের কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছিলেন। যার মেমো নম্বর: ১৭৭৭/বিডিও/মেমারি ১/২০২৫। পরের দিনই সেখান থেকে বিডিওকে জবাব দেওয়া হয়, ১৫ মে দুপুর ২টো ৩১ মিনিটে একটি পরিচয়পত্র তৈরি করা হয়। ২টো ৩৮ মিনিটে ‘ডিজিটাল সিগনেচার সার্টিফিকেট’ (ডিএসসি)-র মাধ্যমে জনৈক দীপান্বিতা মণ্ডল ওই দরপত্রটি বাতিল করে দিয়েছেন। দীপান্বিতা নামে কারওর খোঁজ ওই পোর্টালের কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। এ দিকে জেলার তরফে জানানো হয়েছে, দীপান্বিতা নামে জেলার কোনও আধিকারিকের কাছে ডিএসসি নেই।
বিডিও তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ওই ডিএসসি বর্তমানে নিষ্ক্রিয়। তাঁর ধারণা, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়েই এ কাজ করেছে। এ ভাবে প্রতারকরা নানা সরকারি তথ্য ও নথি পরিবর্তন করে দিতে পারে। প্রসঙ্গত, ব্লক সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি গ্রামীণ হাসাপাতালের বহির্বিভাগের অতিরিক্ত ভবন তৈরির জন্যে (বর্ধমান পূর্ব)-এর সাংসদ শর্মিলা সরকার তাঁর তহবিল থেকে ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন। সেই কাজের জন্যে ২৫ এপ্রিল সরকারের নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমে দরপত্র ডাকা হয়েছিল। যার মেমো নম্বর: ৩৫৮। আর তারপরেই ঘটে এই কাণ্ড।