• স্কুলে যাবে প্রাথমিকের পড়ুয়ারা, নৌকায় মহানন্দা নদী পার করে দেয় নাবালক মাঝি
    বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, পুরাতন মালদহ: পড়াশোনা করার বয়স। অথচ নৌকার হাল ধরতে হয়েছে নাবালককে। মহানন্দার এপার থেকে ওপারে পৌঁছে দিচ্ছে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের। তাতে ঝুঁকি অনেক। সেটাই এখন চিন্তার কারণ অভিভাবকদের। মাঝির দায়িত্বে থাকা নাবালকের কথায়, বাবা সকালে নৌকা চালায়। তারপর আমি যাত্রী পারাপার করি। 

    পুরাতন মালদহের মহানন্দায় নাবালক নৌকা নিয়ন্ত্রণ করছে দেখে যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন  উঠছে। দিনভর সুরক্ষা ছাড়াই যেভাবে নদী পারাপার করা হচ্ছে, তাতে প্রশাসনের নজরদারিতে গাফিলতি দেখছেন বাসিন্দারা।  তাঁদের একাংশের দাবি, নাবালকের বাড়ির সদস্যদের বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টে তাঁরা যাত্রীদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। যদি খুদে পড়ুয়া সমেত নৌকা মহানন্দার জলে তলিয়ে যায়, দায় কে নেবে? স্থানীয় বাসিন্দা সপ্তমী মণ্ডল বলেন, আমাদের বাড়ির বাচ্চারাও নৌকায় পারপার করে। খুব ভয়ে থাকি। আগে নাবালককে দিয়ে নৌকা পারাপার করতে বারণ করেছিলাম। তখন আমাদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিয়েছিল। বিষয়টি প্রশাসনের খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

    পুরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ ঘটনার কথা শুনে বলেন, শিশুশ্রম নিষিদ্ধ। এরকম কিছু ঘটে থাকলে খতিয়ে দেখা হবে। দ্রুত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মহানন্দার নদীর একদিকে পুরাতন মালদহ শহর, অন্যদিকে ইংলিশবাজার শহর এবং গ্রাম রয়েছে। ইংলিশবাজার এলাকার টেকরা গ্রামের সিংহভাগ পড়ুয়া পুরাতন মালদহ শহরের বেশ কিছু হাই এবং প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনা করে। আবার দুই এলাকার মানুষকে কাজের প্রয়োজনে নৌকায় মহানন্দা পার হতে হয়। ইংলিশবাজারের খুদে পড়ুয়ারা নৌকা করে নিত্যদিন স্কুলে আসে এপারে। মঙ্গলবার ইংলিশবাজার থেকে একটি নৌকা ৬ জন খুদে পড়ুয়াকে নিয়ে পুরাতন মালদহ শহরে আসে। নৌকায় মাঝি হিসাবে দেখা যায় এক নাবালককে। শাকমোহন প্রাথমিক স্কুল সংলগ্ন নদীর ধারে পড়ুয়াদের নামানো হয়। নৌকায় চেপে স্কুলে আসা শিবা হালদার বলে, আমরা এভাবেই নৌকা করে রোজ স্কুলে আসি। আমাদের সঙ্গে বন্ধুরাও থাকে।

    শাকমোহন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিপুল ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের স্কুলের অনেকে নৌকা করেই আসে। অভিভাবকদের বলেছিলাম, আপনারা সন্তানদের রেখে যাবেন। স্কুল শেষে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ফের একবার তাঁদের সেই পরামর্শ দেওয়া হবে।   নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)