• তিনদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে সেচমন্ত্রী
    বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: এবার নদী ভাঙনের আশঙ্কা উত্তরবঙ্গে। তিস্তা, জলঢাকা সহ বিভিন্ন নদীর জলস্তর নামতেই এমন আশঙ্কা করছেন নদীর তীরবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ির কলাবাড়িতে ডায়না ও ধূপগুড়িতে ডুডুয়া নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় আজ, বুধবার উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। অন্যদিকে, বৃষ্টির দাপট কমলেও বর্ষার মরশুম অব্যাহত। তাই বন্যার আশঙ্কায় ধূপগুড়িতে জলঢাকা নদীর সংলগ্ন জমির বোরো ধান কাটছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় শিলিগুড়িতে সতর্ক ‘আপদামিত্র’রা। 

    উত্তরবঙ্গের বড় নদীগুলির মধ্যে তিস্তা অন্যতম। যা কালিম্পং, দার্জিলিং জেলার সামান্য অংশ হয়ে জলপাইগুড়ি ও মেখলিগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সোমবার রাত থেকেই নদীর জলস্তর কমছে। একই অবস্থা জলঢাকা, ডায়না, কোচবিহার তোর্সা, রায়ডাক, মানসাই, শিলিগুড়ির মহানন্দার। সেচদপ্তর সূত্রে খবর, পাহাড়ে বৃষ্টির তীব্রতা কমায় অধিকাংশ নদীর জলস্তর নামছে। তিস্তা ও জলঢাকার অসংরক্ষিত এলাকা থেকে হলুদ সঙ্কেত প্রত্যাহার করা হয়েছে। 

    এখন নদীর পাড়, বাঁধ, রিফ্লেক্টর বাঁধে ভাঙন ধরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে কলাবাড়িতে ডায়না নদীর পাড়ে ভাঙন ধরেছে। গত দু’দিনের মধ্যে সেখানে পাড়ের প্রায় ৬০০ মিটার অংশ ভেঙেছে। সেচদপ্তরের উত্তর-পূর্ব ডিভিশনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ডায়নার ওই জায়গায় বোল্ডার দিয়ে পাড় বাঁধানোর কাজে নামা হয়েছে। ধূপগুড়িতে ডুডুয়ার পাড়ও জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা হয়েছে। এর বাইরে অন্য কোনও নদীতে ভাঙন শুরু হয়নি। 

    এই অবস্থায় এদিন কলকাতা থেকে শিলিগুড়িতে আসছেন সেচমন্ত্রী। প্রথমে তিনি শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে দার্জিলিং, কালিম্পং জেলা প্রশাসন, পুলিস ও সেচদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে উত্তরবঙ্গের নদী ও বাঁধের অবস্থা, সিকিম ও ভুটানের আবহাওয়া সহ দুর্যোগ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন বলে খবর। পরে আলিপুরদুয়ার জেলায় যাবেন। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করার পর বৃহস্পতিবার তিনি জলপাইগুড়িতে আসবেন। তিস্তা সহ বিভিন্ন নদী পরিদর্শন করার পর শুক্রবার কলকাতায় ফিরবেন। 

    এদিকে, সোমবার রাত থেকে পাহাড় ও সমতলে বৃষ্টির দাপট কমেছে। তা হলেও বন্যা ও দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে চরম সতর্ক রয়েছে শিলিগুড়ির আপদামিত্ররা। মহকুমা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দপ্তরের অধীনে আপদামিত্রের সংখ্যা ১৫০ জন। যাঁরা মাটিগাড়া, নকশলাবাড়ি, খড়িবাড়ি ও ফাঁসিদেওয়া ব্লকে রয়েছেন। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি আপদামিত্রদের কিট দেওয়া হয়েছে। তাতে গ্লাভস, হেলমেট, গামবুট, রেইনকোট, টর্চ প্রভৃতি রয়েছে। যেকোনও পরিস্থিতিতে তাদেরকে প্রথমে ময়দানে নামানো হবে। 

    এদিকে, বন্যার আশঙ্কায় জলঢাকা নদীর শাখা সংলগ্ন ধূপগুড়ির কুর্শামারিতে জমির ধান কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে তাঁরা দেড়শো বিঘার জমির ৭০ শতাংশ ধান কেটে নিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)