• গোঁসাইরহাটে সাপের কামড়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু
    বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শীতলকুচি: সচেতনতার অভাব! হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় সর্পাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরের। নাতিকে সাপে কামড়েছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ঠাকুমা। সোমবার শীতলকুচি ব্লকের গোঁসাইরহাট পঞ্চায়েতের বড় ধাপেরচাত্রা গ্রামে সাপের ছোবলে মৃত্যু হল এক কিশোরের। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম শুভঙ্কর বর্মন (১৩)। সে বড় ধাপেরচাত্রা জুনিয়র হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত। 

    মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিনের মতো মাঠে খেলাধুলোর পর সোমবারও সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরে শুভঙ্কর। কিছুক্ষণ পর টর্চ লাইট নিয়ে বাথরুমে শৌচকর্ম করতে যায়। সেই সময় তাকে বিষধর সাপে ছোবল মারে। ঘরে ফিরে ঠাকুমাকে জানায়, পায়ে কী কামড়াল, ব্যথা হচ্ছে। কিন্তু তাকে সাপে কামড়েছে সেবিষয়টি বুঝতেই পারেননি তিনি। সারাদিন খেলাধুলো করে, টিন দিয়ে কেটেছে বা পায়ে অন্য কিছুর লেগেছে এই ভেবেই ব্যথা উপশম করতে তেল দিয়ে মালিশ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরেই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে শুভঙ্করের। কী হয়েছে বুঝতে না পেরে প্রতিবেশীকে ডাকলে তাঁরা দ্রুত তাকে শীতলকুচি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক মাথাভাঙা মহকুমা হাসপাতালে রেফার করেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। 

    মৃতের মা রূপালি বর্মন জানান, বাইরে থেকে এসে ছেলে বিছানায় শুয়ে পড়ে। ঠাকুমাকে জানায় মাথাব্যথা করছে পায়ে কিছু কামড়েছে। ওর ঠাকুমা বুঝতেই পারেনি নাতিকে সাপে কামড়েছে। অপরদিকে, শুভঙ্করের বাবা কার্তিক বর্মন ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। কয়েকদিন আগেই অরুণাচলে কাজে গিয়েছেন তিনি। ছেলের মৃত্যুর খবর পেলেও এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি। 

    মঙ্গলবার বিকেলে শুভঙ্করের দেহ বাড়িতে ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তার পরিবার ও পরিজনেরা। বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরাও। বাসিন্দারা জানান, বর্ষাকালে গ্রামে সাপের উপদ্রপ বেড়ে যায়। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তার পরিবারের লোকেরা সচেতন থাকলে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত। 

    গোঁসাইরহাট পঞ্চায়েত প্রধান কনকচন্দ্র বর্মন জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। সচেতনতা বাড়াতে এলাকায় প্রচার অভিযান চালানো হবে। শীতলকুচি থানার ওসি অ্যান্থনি হোড়ো জানান, দেহটি ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।  কান্নায় ভেঙে পড়েছে মৃত ছাত্রের পরিবার। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)