• বর্ধমানে ধৃত বাংলাদেশির বয়ানে চাঞ্চল্যকর তথ্য, টাকা নিয়ে পরিচয়পত্র দিয়েছিল সিপিএম
    বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: অনুপ্রবেশ নিয়ে বিজেপির সুরেই তৃণমূলকে তোপ দাগছে সিপিএম। ভোটব্যাঙ্কের জন্য শাসক দল অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিচ্ছে বলে তাদের দাবি। কিন্তু, মঙ্গলবার বর্ধমান থেকে গ্রেপ্তার হওয়া এক বাংলাদেশি সিপিএমের মুখোশ খুলে দিয়েছে। মহম্মদ সফিকুল সর্দার নামে ওই বাংলাদেশিকে পুলিস তেলিপুকুর থেকে গ্রেপ্তার করে। এদিন আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় সে ক্যামেরার সামনে বলে, ২০০১ সালে বর্ধমানে এসেছিলাম। ২০০৮ সালে এক সিপিএম নেতা রেশন কার্ড তৈরি করে দেয়। পরে তিনি প্যান কার্ড তৈরিতেও সহযোগিতা করেন। প্যানকার্ড দেখিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়ে যায়।

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৮ বছরের ওই যুবক ২৪ বছর ধরে অবৈধভাবে বর্ধমানে রয়েছে। প্রথমে সে একটি হোটেলে কাজ করত। পরে ট্রাক চালাতে শুরু করে। বর্ধমান থেকে ট্রাক নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে সে গিয়েছে। তেলিপকুরে এক সম্পর্কিত দিদির বাড়িতে সে থাকত। তার বাবা ও মা এখনও বাংলাদেশের যশোরে রয়েছে। ধৃত জেরায় জানিয়েছে, দালালদের মাধ্যমেই সে এদেশে এসেছিল। মাঝে কয়েকবার বাংলাদেশেও যায়। 

    অতিরিক্ত পুলিস সুপার অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ধৃত যুবক কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি। সে বাংলাদেশের বাসিন্দা সেটা সে স্বীকার করে নিয়েছে। 

    পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অবৈধভাবে এরাজ্যে থাকা অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে পুলিস ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। সন্দেহজনকভাবে কেউ এলাকায় বসবাস করলে সে পুলিসের স্ক্যানারে চলে আসছে। এর আগেও পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিস কয়েকজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে। তাদের অনেকেই বাম আমলে এদেশে আসে। তারা সেই সময় সিপিএম নেতাদের সহযোগিতায় বৈধ নথি বানিয়েছিল। তৃণমূল জমানাতেও অনেকেই অবৈধভাবে এরাজ্যে এসেছিল বলে অভিযোগ। 

    তবে সিপিএম নেতারা এক তরফাভাবে যে অভিযোগ করে আসছিল সেটা যে ঠিক নয়, তা বর্ধমানের ধৃত যুবক স্পষ্ট করে দিয়েছে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য হারাধন ঘোষ বলেন, যারা বেআইনিভাবে এরাজ্যে এসে বসবাস করছে পুলিস তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। তারা কাদের ইন্ধনে এই কাজ করছে, সেটাও তদন্ত করে দেখা হোক। কিন্তু, যারা বহু বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন, তাঁদের যেন হেনস্তা না করা হয়। 

    তৃণমূল নেতা দেবু টুডু বলেন, এরাজ্যে সিপিএমের আমলেই অনুপ্রবেশকারীরা এসেছিল। এখন তারা অন্য বুলি আওড়াচ্ছে। ওদের নেতারা টাকা নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ভোটার কার্ড বানিয়ে দিয়েছে। পুলিস তাদের খুঁজে বের করছে।

    পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যাদের এদেশে থাকার জন্য বৈধ নথি রয়েছে, তাদের কাউকেই কিছু বলা হচ্ছে না। কিন্তু যারা সব কিছুই নকল দেখাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)