‘বাংলার বাড়ি’র টাকা তুলে উধাও বহু ভোক্তা, এলাকায় গিয়ে হতবাক আধিকারিকরা
বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: কেন্দ্রীয় সরকার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বাসিন্দাদের পাকা আস্তানা দিতে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প শুরু করেছেন। জেলা প্রশাসন সেই মতো সমীক্ষা করে কাঁচাবাড়িতে থাকা পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করে রাজ্যে তালিকা পাঠায়। রাজ্য সরকার প্রথম দফার টাকা অনেক আগেই দিয়ে দিয়েছে। সেই টাকায় বাড়ি তৈরির কাজ কতটা এগিয়েছে, তা জানতে গিয়ে আধিকারিকদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। বেশকিছু পরিবার বাংলার বাড়ি প্রকল্পের টাকা অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে উধাও হয়ে গিয়েছে। এলাকায় গিয়ে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এরকম আপাতত ১৭টি পরিবারের খোঁজে আধিকারিকরা তল্লাশি করছেন।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকে আবার টাকা পাওয়ার পর এখনও বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেনি। এরকম ১২৬টি পরিবারের কাছে থেকে ইতিমধ্যে প্রশাসন টাকা ফিরিয়ে নিয়েছে। আরও ৬০টি পরিবারের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে। তাদের বাড়ি তৈরির জন্য আবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা তা না করলে টাকা ফিরিয়ে নেওয়া হবে। কেউ টাকা ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক আয়েশা রানি এ বলেন, কারও কাছ থেকে টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য আমাদের নেই। যাঁরা টাকা পাওয়ার পর বাড়ি তৈরি করছেন, তাঁদের সব রকমভাবে সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু, বাড়ি তৈরি না করলে টাকা ফেরত দিতে হবে। এই প্রকল্পের টাকা অন্য কাজে খরচ করা যাবে না। প্রতিটি পরিবারকে যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় টাকা পাওয়ার পর যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৬৪হাজার ৬৯৯টি পরিবারকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়েছে। পরিবারগুলি নিজেদের পরিকল্পনা মতো বাড়ি তৈরি করতে পারবে। আধিকারিকরা বলেন, এই প্রকল্পের জন্য এলাকার কোনও প্রভাবশালীকে খুশি করার দরকার নেই। যে বা যারা টাকা চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপভোক্তারা নিজেদের পছন্দের জায়গা থেকে ইমারতি সামগ্রী কিনতে পারবে। কোনও সিন্ডিকেট জোর জুলুম করলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি জামালপুর এবং কাটোয়া মহকুমা থেকে কয়েকটি অভিযোগ প্রশাসনের কাছে জমা পড়ে। কয়েকজন উপভোক্তাদের কাছে থেকে টাকা দাবি করেছিল। প্রশাসন সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে টাকা পাওয়ার পর কোনও উপভোক্তা বাড়ি তৈরি না করলে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিতে আর দেরি করবে না। প্রথম দফায় টাকা পাওয়ার পর প্রায় আড়াই মাস কেটে গিয়েছে। একাধিকবার প্রতিটি উপভোক্তাকেই বাড়ি তৈরি করতে বলা হয়েছিল। অধিকাংশ পরিবার কাজ শুরু করেছে। কিছু উপভোক্তা আধিকারিকদের চোখে ধুলো দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।