মাদক কারবারিকে ধরতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিস, গাড়ি ভাঙচুর
বর্তমান | ০৪ জুন ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে আসানসোলে আক্রান্ত হল পুলিস। মঙ্গলবার জেলাশাসকের অফিসের অদূরে একটি বেসরকারি হাসপাতালের সামনে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, আসানসোল উত্তর থানার আজাদবস্তির বাসিন্দা মহম্মদ রাজাকে ধরতে সাদা পোশাকে হাজির হয় পুলিস। তার বিরুদ্ধে মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে। তাকে ধরে জোর করে গাড়িতে তুলতেই পুলিসের গাড়ির সামনে চড়াও হয় তার আত্মীয়-পরিজনরা। রাজাকে গ্রেপ্তার করতে বাধা দেওয়ায় তার আত্মীয় মহম্মদ মিরাজকেও পুলিস গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। তখনই এলাকার লোকজন পুলিসকে ব্যাপক মারধর করে। তাতে তিন পুলিস কর্মী জখম হন। ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির কাচও। আত্মীয়রা মিরাজকে ছিনিয়ে নিলেও পুলিস রাজাকে ছাড়েনি। পরে বিশাল পুলিস বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ডিসি(সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস বলেন, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ এক অভিযুক্তকে ধরতে যায়। সেই সময়েই তার আত্মীয়-পরিজনরা পুলিসের উপর হামলা চালায়। আমাদের তিন পুলিসকর্মী জখম হন। একটি গাড়িও ভাঙচুর করেছে। আমরা মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।
জানা গিয়েছে, আজাদবস্তির বাসিন্দা সামিনা খাতুন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। জেলাশাসকের কার্যালয়ের অদূরে রয়েছে এই হাসপাতালটি। টাউনশিপের মধ্যে হওয়ায় রয়েছে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আবাসন প্রকল্পের নিজস্ব সিকিউরিটির পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীও রয়েছে। সেখানেই হাজির হয় মহম্মদ রাজা। সে সামিনা খাতুনের আত্মীয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সামিনাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার তোড়জোড় চলছিল। আজাদবস্তির অনেকেই হাসপাতালের সামনে জড়ো হন। সেই সময়েই কয়েকজন সাদা পোশাকের পুলিস মহম্মদ রাজাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তারজেরে বাধার মুখে পড়তে হয় পুলিসকে। সামিনা খাতুনের ছেলে মহম্মদ মিরাজ পুলিসের কাছে জানতে চায়, কী অপরাধে রাজাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? পুলিসের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে পুলিস আটক করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করে। এরপরই উত্তেজিত জনতা পুলিসের উপর চড়াও হয়। পুলিসের কাছ থেকে মিরাজকে ছিনিয়ে নিয়ে বেধড়ক মারধর শুরু হয়। গাড়ির কাচ ভেঙে রাজাকেও বের করে নেওয়ার চেষ্টা চলে। যদিও পুলিস রাজাকে নিয়ে জোরে গাড়ি চালিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার ওসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী উপস্থিত হয়। ঘটনাস্থলে হাজির হন আজাদনগর এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলার ফনসবি আলিয়া। পুলিস গোটা ঘটনার সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত শুরু করেছে।
আসানসোল উত্তর থানার রেলপার এলাকায় মাদকের রমরমা কারবার রয়েছে। সম্প্রতি পুলিস মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ করতে তৎপর হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই মহম্মদ রাজাকে গ্রেপ্তার করতে সচেষ্ট হয়।
মিরাজের ভাই ইমামুদ্দিন বলেন, মাকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য সকলে ব্যস্ত ছিল। তখনই দেখা যায়, একদল যুবক রাজাকে মারতে মারতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আমার ভাই বাধা দেওয়ায় তাকেও মারধর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা হয়। তখনই সকলে গাড়ি ঘিরে ধরে। ওরা পুলিস না দুষ্কৃতী, আমরা কী করে বুঝব?