পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের এক মন্দির থেকে স্থানীয় সরকারি স্কুলের এক কর্মীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মহত্যা করেছেন তিনি। পরিবার এবং স্থানীয়দের দাবি, পার্থসারথি বারিক নামে ওই ব্যক্তির দেনা হয়েছিল অনেক। টাকা চেয়ে তাগাদা দিচ্ছিলেন পাওনাদারেরা। পাওনাদারদের অপমানের জেরেই চরম পদক্ষেপ করেছেন তিনি। একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থসারথির বয়স ৪৪ বছর। আউশগ্রামে তাঁর বাড়ি। সেখানকার এক স্কুলেই চাকরি করতেন তিনি। আউশগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফকির মণ্ডল বলেন, ‘‘পার্থ সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। কাজে দক্ষ ছিলেন। আমরা শুনেছিলাম অনেকের কাছে তাঁর প্রচুর ধার রয়েছে। এই নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলেও তিনি কিছু বলেননি। সোমবার আমরা তাঁকে স্কুলে দেখে কিছু বুঝতে পারিনি।’’ ফকিরের দাবি, বছর চারেক আগে একটি গাড়ি কিনেছিলেন। তার পর থেকেই আর্থিক সমস্যার মধ্যে পড়েন।
মৃতের স্ত্রী অপরূপা বারিক বলেন, ‘‘এই গ্রামে তিন জন দেনা আদায়ের জন্য তাঁকে চাপ দিতেন। সোমবার একজন পাওনাদার এসে তাঁকে মেয়ের সামনে চড় মারেন। এতেই মনে আঘাত পান ওই তিনি।’’ ওই ব্যক্তি যদিও দাবি করেছেন, তিনি ধার দেননি। টাকা আদায়ের জন্য চাপও দেননি।
মঙ্গলবার সকালে আউশগ্রাম থানার কাছে কালীমন্দির থেকে পার্থসারথির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট। তাতে পাওনাদার হিসাবে তিনজনের নাম উল্লেখ করে গিয়েছেন পার্থসারথি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আউশগ্রাম স্কুলেরই এক শিক্ষক। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃতের স্ত্রী অপরূপা জানিয়েছেন, সোমবার তাঁর স্বামীর জ্বর এসেছিল। রাতে খাওয়া দাওয়ার পরে সবাই শুয়ে পড়েছিলেন। বাকিদের ঘুম থেকে ওঠার আগেই ভোরে বাড়িতে স্নান সেরে মন্দিরে চলে গিয়েছিলেন পার্থসারথি। বাড়ির কেউ টের পাননি। তার পরেই এই ঘটনা।